মার্কিন আকাশসীমায় চীনের ‘গুপ্তচর বেলুন’!
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের ভাষ্যে, যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়ছে এক বিশেষ বেলুন, যা ঘিরে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা। পেন্টাগনের দাবি, মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও স্পর্শকাতর পরমাণু কেন্দ্রগুলোর উপর নাকি এই 'গুপ্তচর বেলুন' ব্যবহার করে নজরদারি করছে চীন!
আমেরিকার প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র পিট রাইডার বলেন, "সন্দেহজনক বেলুনটি কয়েক দিন আগেই আমাদের নজরে এসেছে। বেলুনটি চরবৃত্তির জন্যই ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা সতর্কভাবে বেলুনটির গতিবিধির উপর নজর রাখছি।''
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেলুনটিকে উত্তর-পশ্চিম আমেরিকায় উড়তে দেখা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্দেশনায় মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন ও জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তারা বেলুনটি গুলি করে ভূপাতিত করার কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু বেলুনটির মধ্যে কোনও তেজস্ক্রিয় পদার্থ থাকলে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে পড়ে বিপত্তি ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ওই পরিকল্পনা সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে।
পেন্টাগনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, "আমরা নিশ্চিত যে, খুবই উঁচু দিয়ে চলাচলকারী এ নজরদারি বেলুনটি চীনের। এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা গত কয়েক বছরে আমরা লক্ষ্য করেছি।" তবে বেলুনটি বেসামরিক নাগরিক কিংবা চলাচলকারী বিমানের জন্য কোন হুমকি নয় বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।
মূলত যেসব অঞ্চল দিয়ে বেলুনটি উড়ছে সেখানে বিমান ঘাঁটি, ভূগর্ভস্থ কৌশলগত ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা রয়েছে। বুধবার প্রায় তিনটি বাসের সমান বিশাল আকৃতির বেলুনটিকে মন্টানা রাজ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। রাজ্যটিতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বিমান বাহিনীর বেইজে মোট তিনটি নিউক্লিয়ার মিসাইল ফিল্ডের একটি অবস্থিত।
'নজরদারি বেলুনটি' কানাডার আকাশসীমা অতিক্রম করে মার্কিন যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যার ফলে ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ কানাডার জন্যও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, "কানাডিয়ানরা নিরাপদে আছেন। কানাডা নিজ দেশের আকাশসীমায় যেকোন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় ও সর্বোপরি নিরাপত্তা রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।"
বেলুনটির গতিবিধি এবং কার্যক্রম যাচাই করতে ইতিমধ্যেই মার্কিন যুদ্ধ বিমান পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।ঘটনাটি দ্রুত বিশ্বজুড়ে হৈচৈ ফেলে দিলেও চীনের পক্ষ থেকে এখনো কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ঘটনাটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত চীন দূতাবাস ও চীনে অবস্থিত ইউএস ডিপ্লোম্যাটিক মিশনের মাধ্যমে চীন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর আগেও বেশ কয়েকবার চীনকে নজরদারির প্রচেষ্টা না চালাতে সাবধান করেছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের বেইজিং সফরের আগ দিয়ে এমন ঘটনা দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কে আরও দূরত্ব সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।