ছত্রাক ধ্বংসকারী নতুন ভয়ংকর রাসায়নিকের নাম রাখা হলো কিয়ানু রিভসের নামে
ছত্রাক নিধনে সক্ষম এমন সদ্য আবিষ্কৃত রাসায়নিক উপাদানের নাম রাখতে গিয়ে চমক দেখিয়েছেন জার্মানির বিজ্ঞানীরা। হলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা কিয়ানু রিভসের নামে নামকরণ করা হয়েছে তিনটি রাসায়নিকের। খবর সিএনএন-এর।
ছত্রাক ধ্বংসে এসব রাসায়নিকের কার্যকারিতা দেখে বিস্মিত হয়েই এ অভিনেতার নামে সেগুলোর নাম 'কিয়ানুমাইসিন' রেখেছেন ওই গবেষকেরা। জন উইক আর দ্য ম্যাট্রিক্স-এর মতো সিনেমায় শত্রুদের যেভাবে নিকেশ করেন রিভস, সেদিকে ইঙ্গিত করেই এমন নামকরণ।
বর্তমান সময়ে প্রচলিত অ্যান্টিফাঙ্গাল-প্রতিরোধী হয়ে উঠছে ছত্রাক। জার্মানির লিবনিজ ইন্সটিটিউট ফর ন্যাচারাল প্রোডাক্ট রিসার্চ অ্যান্ড ইনফেকশন বায়োলজি'র গবেষক ও বর্তমান গবেষণার সহলেখক সেবাস্টিয়ান গোটশে জানান, নতুন আবিষ্কৃত এ রাসায়নিক উপাদান তিনটি ছত্রাক ধ্বংসে যেমন সফল, তেমনিভাবে এগুলো মানবদেহে ছত্রাকজনিত সংক্রমণের চিকিৎসায়ও দারুণ কার্যকর হবে।
সম্প্রতি এ গবেষণাটি জার্নাল অব দ্য আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটিতে প্রকাশিত হয়েছে।
'লাইপোপেপটাইড ধরনের ওই রাসায়নিক পদার্থগুলো ছত্রাক নিধন করার সময় কিয়ানু রিভসের চরিত্রদের মতোই ভয়ংকর হয়ে ওঠে', এক বিবৃতিতে বলেন গোটশে।
সচরাচর মাটি ও পানিতে পাওয়া সিউডোমনাস ব্যাকটেরিয়ার প্রাকৃতিক উপজাত এই কিয়ানুমাইসিন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানগুলো।
গবেষণাটির প্রধান লেখক পিয়ের স্টলফোর্থ জানিয়েছেন, সিউডোমনাস ব্যাকটেরিয়ার অনেক প্রজাতি অ্যামিবার জন্য খুবই বিষাক্ত। বিজ্ঞানীরা তাই ছত্রাকের বিরুদ্ধে এগুলোর কার্যকারিতা বিষয়ে জানতে গবেষণা শুরু করেন। ছত্রাকের কোষের গঠনও অ্যামিবার মতো হয়।
গবেষকেরা কিয়ানুমাইসিন এ, বি, ও সি প্রথমে বট্রিটিস সিনেরিয়া নামক ছত্রাকের ওপর পরীক্ষা করেন। এ ছত্রাক কিছু ফল ও সবজিকে আক্রমণ করে ফসলের ক্ষতি করে।
গবেষণা অনুযায়ী, কিয়ানুমাইসিন বায়োডিগ্রেডেবল। অর্থাৎ, এটি কীটনাশকের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে ব্যবহারের সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া কিয়ানুমাইসিন ক্যানডিডা অ্যালবিক্যানস নামক এক ধরনের প্রাকৃতিক ইস্টের বিরুদ্ধেও কার্যকর। এ ইস্ট মানবদেহে মারাত্মক সংক্রমণের কারণ হতে পারে।
ছত্রাকবিরোধী চিকিৎসায় ব্যবহার করা উপাদান সাধারণত মানবকোষের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে। কিন্তু কিয়ানুমাইসিনগুলোর এ ধরনের কোনো ঝুঁকি নেই বলেও জানা গেছে পরীক্ষায়।