ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা পুলিশের, পাকিস্তানজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের আশঙ্কা
লাহোরের বাসভবন থেকে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পুলিশ অভিযোগ করে, তিনি গ্রেপ্তার এড়ানোর চেষ্টা করছেন। এরপরই জনসম্মুখে আসেন ইমরান। খবর ব্লুমবার্গের
এসময় তিনি বলেন, 'আমি শুধু আল্লাহর সামনে মাথানত করি, অন্য কোনো শক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সামনে নয়। এটা আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের আসল লড়াই'। পাকিস্তানে ব্যাপক দুর্নীতির জন্য এসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে দোষারোপ করেন।
এর আগে ইসলামাবাদ পুলিশের মুখপাত্র ত্বকি জাওয়াদ বলেন, রোববার (৫ মার্চ) ইমরানকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করতে পুলিশের একটি দল তার বাসভবনে গেলেও, তাকে সেখানে পাওয়া যায়নি। ইসলামাবাদ পুলিশের মহাপরিদর্শক আকবর নাসির খান গণমাধ্যমকে বলেন, ৭ মার্চের আগেই তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের চেয়ারম্যানকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ আছে।
তিনি স্থানীয় গণমাধ্যম এআরওয়াই টেলিভিশনকে বলেন, 'পুলিশকে অবশ্যই তাকে (ইমরান খান) গ্রেপ্তার করতে হবে। আইনি প্রক্রিয়ায় বাধা না দিতে আমরা জনতার কাছে অনুরোধ করছি'।
গ্রেপ্তার ঠেকাতে ইমরানের বাড়ির বাইরে তাবু খাঁটিয়ে অবস্থান করছেন তার অনেক সমর্থক। পিটিআই নেতারাও সামাজিক মাধ্যমে সমর্থকদের ইমরানের বাড়ির সামনে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ করছেন।
ইমরানের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীরা জানান, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে জনতার সংঘর্ষ হতে পারে।
ইমরান তার ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন সম্প্রতি এমন এক অভিযোগের শুনানি হয় পাকিস্তানের একটি আদালতে। অভিযোগটি আনে সেদেশের নির্বাচন কমিশন। এতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় পাওয়া উপহারের হিসাব সরকারি তোষাখানায় দেননি তিনি। শুনানিতে ইমরান উপস্থিত না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পিটিআই প্রধান অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ইতঃপূর্বে গেল নভেম্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালে ইমরান খানকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। এই হত্যাচেষ্টার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই- এর একজন জেনারেলকে দায়ী করেন।
পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট গুরুতর হতে থাকায় অনেক মানুষই বর্তমান সরকারের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এই অবস্থায়, ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চরম মাত্রা লাভ করতে পারে এমন আশঙ্কা রয়েছে।