বিশ্বরেকর্ডের আশায় রুবিকস কিউব সাথে নিয়ে টাইটানে চেপেছিলেন ১৯ বছরের সুলেমান
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে নিহত পাঁচ যাত্রীর মধ্যে ছিলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ (৪৮) এবং তার ১৯ বছর বয়সী ছেলে সুলেমান দাউদ।
২২ ফুট লম্বা সাবমারসিবল 'টাইটানে' চেপে ভ্রমণের সময় নিজের সাথে একটি রুবিকস কিউব নিয়েছিলেন সুলেমান। তার ইচ্ছে ছিল, এর মাধ্যমে বিশ্বরেকর্ড গড়ার। বিবিসিকে এসব জানিয়েছেন সুলেমান দাউদের মা ক্রিস্টিন দাউদ।
"ও বলেছিল, সাগরের ৩,৭০০ মিটার নীচে, টাইটানিকে আমি রুবিকস কিউব সমাধান করতে যাচ্ছি", জানান ক্রিস্টিন।
যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোর ইউনিভার্সিটি অব স্ট্র্যাথক্লাইডের এই শিক্ষার্থী অভিযানের আগে তার এ উদ্যোগের ব্যাপারে জানাতে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের সাথেও যোগাযোগ করেছিলেন।
ছেলে হয়তো বিশ্বরেকর্ড করেই ফেলবে! মুহূর্তটি ধরে রাখতে তাই বাবা, পাকিস্তানের অন্যতম ধনাঢ্য ব্যক্তি শাহজাদা দাউদ একটি ক্যামেরাও নিয়েছিলেন টাইটানে।
আসলে সুলেমান রুবিকস কিউবের এতো বেশি ভক্ত ছিলেন, যেখানেই যেতেন সাথে একটি কিউব নিতেন; সুলেমান এতটাই পারদর্শী হয়ে উঠেছিলেন যে মাত্র ১২ সেকেন্ডের মধ্যেই এই পাজল মিলিয়ে ফেলতে পারতেন।
সাবমারসিবল টাইটানের সাথে যখন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন সাপোর্ট শিপ, পোলার প্রিন্স-এই অবস্থান করছিলেন ক্রিস্টিন ও তার মেয়ে, আলিনা দাউদ।
বিবিসিকে ক্রিস্টিন বলেন, "আমি ঠিক তখনও বুঝে উঠতে পারিনি কী হতে যাচ্ছে।"
ক্রিস্টিন জানান, সুলেমানের সম্মানে এখন তিনি ও তার মেয়েও রুবিকস কিউব মেলানো শিখবেন।
গত রোববার (১৮ জুন) আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ হয় ডুবোযান 'টাইটান'। সমুদ্রে ডুব দেওয়ার এক ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পরেই মূল জাহাজের সঙ্গে টাইটানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এটি পরিচালনা করছিলেন স্টকটন রাশ, যিনি নিজেও দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
নিখোঁজ হওয়ার পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ সমুদ্রে অনুসন্ধানে নেমে পড়ে। জাহাজ ও বিমান ব্যবহার করে সমুদ্র চষে ফেলা হয় এটির খোঁজ পাওয়ার জন্য।
পাঁচদিনের মাথায় কানাডার একটি জাহাজ থেকে অনুসন্ধানে নিযুক্ত করা গভীর সমুদ্রে চলাচলের উপযুক্ত মনুষ্যবিহীন একটি রোবট সমুদ্রের তলদেশে টাইটানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়।
টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের সামনের অংশ থেকে ১,৬০০ ফুট দূরে সমুদ্রের তলদেশে বিধ্বস্ত টাইটান পড়ে ছিল বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মার্কিন কোস্ট গার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মগার। তাতেই জানা যায়, নিহত হয়েছেন টাইটানের পাঁচ আরোহীর সবাই।