যুদ্ধবিরতির দাবি জানানো ৩০০ বিক্ষোভকারীকে ক্যাপিটল হিল থেকে গ্রেপ্তার
যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবন ক্যাপিটল হিলে শত শত মানুষ সমবেত হয়ে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধ ও অবিলম্বে যুদ্ধ-বিরতির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের প্রায় ৩০০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে মার্কিন পুলিশ, এবং ক্যাপিটলে সাধারণ নাগরিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
জায়নবাদ-বিরোধী ইহুদিদের দুটি সংগঠন – 'জুইশ ভয়েস ফর পিস' এবং 'ইফ নট নাউ' – এ সমাবেশের আয়োজন করে। সংগঠন দুটির প্রায় ৪০০ সদস্য ক্যাপিটল হিলে অবস্থিত ক্যানোন হাউস অফিসের গোলচত্বরে জড়ো হন।
সমাবেশে ২৫ জন ইহুদি ধর্মযাজক বা রাবাই ফিলিস্তিনিদের বক্তব্য পড়ে শোনান, ও শান্তির জন্য প্রার্থণা করেন। ক্যাপিটল হিলের বাইরে সমবেত আরও শত শত মানুষ উচ্চকিত কন্ঠে 'এখনই যুদ্ধবিরতি চাই' স্লোগান দেন এবং হিব্রু ও ইংরেজি ভাষায় গান গেয়েছেন।
তবে মার্কিন পার্লামেন্ট বা কংগ্রেসের ভবনগুলোয় কোন ধরনের বিক্ষোভের অনুমতি দেওয়া হয় না। এজন্য প্রায় ৩০০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে আয়োজকরা অনুমান করছেন।
আয়োজকদের দাবীকৃত এই সংখ্যার বাইরে কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ক্যাপিটল হিলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ। তাদের 'এক্স' (সাবেক টুইটার) একাউন্টে বলা হয়, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তিনজনকে পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্ষোভকারীদের হাতকড়া পড়িয়ে পুলিশ ভ্যানে তোলা হয়।
ফিলাডেলফিয়ার একজন নারী রাবাই লিন্ডা হলজম্যান বলেন, নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও ইহুদিদের ইতিহাসের কারণেই তিনি বিক্ষোভ করেছেন।
সমাবেশে অংশ নেওয়া অন্যরাও একই ধরনের মতপ্রকাশ করেন।
হলজম্যান বলেন, গাজার বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মকভাবে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় তিনি উদ্বিগ্ন। তিনি জানান, তার দাদি ছিলেন হলোকাস্ট থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়াদের একজন এবং তার কাছ থেকেই তিনি সকল মানুষের জীবন অমূল্য এই শিক্ষা পেয়েছেন।
'যেখানে কোন ন্যায়বিচার নেই, সেখানে আমাকেই ন্যায়বিচারের পক্ষে সোচ্চার হতে হবে' বলেন তিনি।
১৮ বছর আগে গাজা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা ইয়াসির বারাকাত-ও বিক্ষোভে অংশ নেন। গাজায় অবস্থানরত নিজ পরিবারের পক্ষে তিনি উপস্থিত হন। জানান, ২০ লাখের বেশি গাজাবাসীর খাদ্য, পানি ও বিদ্যুৎ ফুরিয়ে আসছে। এমন পরিস্থিতিতে নিজের পরিবারের সাথেও যোগাযোগ রক্ষা করতে পারছেন না। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে অর্থায়ন করার জন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেন।
এর আগে গত সোমবার হোয়াইট হাউসের সামনে বিক্ষোভ করেছিল জুইশ ভয়েস ফর পিস। ওই সমাবেশে প্রায় ৫ হাজার মানুষ অংশ নেন। এর দুদিন পরেই ক্যাপিটল হিলে সমাবেশ করে তারা। বুধবারের সমাবেশ থেকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে আরেকটি বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে।