গাজায় সংঘাত বন্ধে যুদ্ধবিরতির আহ্বান যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্সের
গাজায় সংঘাত বন্ধে এবার ইসরায়েলের তিন মিত্র যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ফ্রান্স যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে গতকাল রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) উত্তর গাজার জাবালিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১০ জনে পৌঁছেছে।
যুদ্ধবিরতির আহ্বান ইসরায়েলের তিন মিত্রের
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানালেনা বেয়ারবক যৌথভাবে দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যের সানডে টাইমস-এ ক্যামেরন ও বেয়ারবক যৌথভাবে একটি নিবন্ধে লিখেছেন, 'কেবল যুদ্ধ বন্ধ করে থেমে যাওয়াই আমাদের লক্ষ্য নয়, বরং আমাদের লক্ষ্য হলো স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা যা দিন, মাস, বছর ও প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে অব্যাহত থাকবে।'
গত সপ্তাহে তাৎক্ষণিক মানবিক যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করে জাতিসংঘ। ১৫৩টি দেশ এ প্রস্তাবে সমর্থন দেয়। তবে সে সময়ে এ প্রস্তাবে সমর্থন জানানো থেকে বিরত ছিল যুক্তরাজ্য ও জার্মানি। এর সপ্তাহখানেক পর ইসরায়েলের মিত্র এই দুই দেশ সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানাল।
ইসরায়েলের আরেক মিত্র ফ্রান্সও তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল রবিবার ইসরায়েল সফরে যান ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাথরিন কোলোনা। সফরে ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সাথে বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে বহু বেসামরিক লোক নিহত হচ্ছে। এ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
জাবালিয়ায় নিহত বেড়ে ১১০
হামাস জানিয়েছে, গত রবিবার জাবালিয়ায় একটি আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে বহু মানুষ নিহত হয়।
হামাসের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসি বাংলাদেশ সময় আজ সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১১০ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি। তারা সন্ত্রাসীদের স্থাপনা হিসেবে উল্লেখ করে ওই এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।
ঘটনাস্থল থেকে এক সাংবাদিক জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়াদের উদ্ধারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
হামলার মধ্যেই সীমান্ত খুলে দিল ইসরায়েল
এদিকে হামলার মধ্যেই গতকাল ইসরায়েল হয়ে গাজায় সরাসরি মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে ইসরায়েল। যুদ্ধের দুই মাসেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো ইসরায়েল থেকে সরাসরি গাজায় প্রবেশের সীমান্ত খুলে দেওয়া হলো।
ইসরায়েল বলছে, হামাসের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির জন্য সামরিক চাপই একমাত্র পথ।
গত শুক্রবার ইসরায়েলের গোয়েন্দা প্রধান কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপের পর গত শনিবার এই সংঘাত বন্ধের একটি আশা তৈরি হয়েছিল।
গতকাল মিসরের দুটি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছিল, ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই নতুন যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে আগ্রহী। তবে এ আলোচনা কবে নাগাদ হতে পারে তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।
যুদ্ধবিরতির আরেকটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হলো যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো গাজায় মানবিক সহায়তার পৌঁছানোর জন্য ইসরায়েল কর্তৃক কেরেম শালোম সীমান্ত খুলে দেওয়া।
অনেকেই বলছেন, গাজায় এখন দ্বিগুণ মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হবে।
তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা হামাসকে নির্মূল করতে বদ্ধ পরিকর।