ইরানের বাজারে ৭০ বছরের বৃদ্ধকে ভাইরাল নাচের অপরাধে গ্রেফতার
ইরানে ৭০ বছর বয়সী সাদেক বানা মোতেজাদেদ ইরানের লোকগীতিতে রাস্তায় নাচেন। তাকে ঘিরে আরো কিছু লোক তালির তালে তালে গান করতে থাকেন।
এই নাচের ভিডিও ক্লিপটির সাথে পরবর্তীতে আরো কিছু তাল যোগ করা হয়। যা লাখেরও অধিক শেয়ার হয় সোস্যাল মিডিয়াতে।
কিন্তু ইরানের রাশত শহরের কর্তৃপক্ষকে বেশ আতঙ্কিত করে মোতেজাদেদ এবং তার সাথীদের এই নাচ। এই নাচ পরবর্তীতে আরো বড় কোন আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ হিসেবেই কাজ করবে বলে আশঙ্কা করে ইরানের সরকার।
প্রশাসন জানায়, জনসম্মুখে নাচের এই ভিডিও ইসলামিক নিয়মকানুনের পরিপন্থী।
বানা মোতেজাদেদ এর ইনস্টাগ্রাম একাউন্টটিও নামিয়ে নেওয়া হয়। ইরানের বিচার বিভাগের ভাষ্যমতে, একাউন্টটি 'সন্ত্রাসী কার্যক্রম প্রচারের' অপরাধে বন্ধ করা হয়েছে এবং এর সাথে জড়িতদেরও মোকাবিলা করা হয়েছে।
এই ভিডিওতে থাকা সবাইকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানায় দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন যে, লোকগুলোর চোখ বেধে মারধর করে আর কখনোই জনসম্মুখে গান বা নাচ করা থেকে বিরত থাকতে জোর করে প্রতিজ্ঞা করানো হয় তাদেরকে।
কিন্তু, ইরানী প্রশাসনের এই কঠোরতায় বরং হিতে-বিপরীত হয়।
ইরানের অসংখ্য জনগণ মোতেজাদেদ এর নাচ নকল করে ভিডিও বানিয়ে পোস্ট করছে সামাজিক মাধ্যমে। এমনকি তাঁর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে সরকারের রক্ষণশীল মিত্রদলগুলো এই গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছে।
"কিভাবে একজন মাছ বিক্রেতার সাধারণ নাচ এবং গানকে আমরা কোন প্রতিরোধ বানিয়ে ফেললাম ?" এভাবেই সংবাদ শিরোনাম লেখা হয়ে হয়েছে ইরানের 'ফারহিখতেগান' পত্রিকায়।
এ অবস্থায় ইরানের কর্তৃপক্ষ পুরো বিষয়টি পুনঃবিবেচনা করে বানা মোতেজাদেদের অ্যাকাউন্টটি ছেড়ে দেন। এবং তিনি এখন বলছেন, তাঁকে কখনো গ্রেফতারই করা হয়নি।
বানা মোতেজাদেদের গান রিমিক্স করার পেছনের যে ডিজে ছিলেন, তিনি বলেন এই শাসকগোষ্ঠী এখন যেকোনো ছোট ছোট বিষয়কে বিদ্রোহের কাতারে ফেলছে।
মোহাম্মদ আঘাপোর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন যে, নাচের এই ট্রেন্ডে যোগ দেয়া একটি শক্তিশালী বার্তা প্রকাশ করে। এটা স্বাধীনতার দাবিতে প্রতিবাদের এক ভাষা।