গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরো দুই সাংবাদিক নিহত
দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় গতকাল রবিবার (৭ জানুয়ারি) ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরো দুই ফিলিস্তিনি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন হামজা আল-দাহদোহ ও মুস্তাফা ছুরায়া। তারা দু'জনই ফ্রিল্যান্সার ছিলেন। আল-দাহদোহ আলজাজিরার জন্য ফ্রিল্যান্সিং করতেন। তিনি আলজাজিরার গাজার চিফ করেসপনডেন্ট ওয়ায়েল আল-দাহদোহের ছেলে। এ ঘটনায় হাজেম রাজাব নামে আরেক ফ্রিল্যান্সার আহত হয়েছেন।
আলজাজিরা এই দুই সাংবাদিকের হত্যার নিন্দা জানিয়েছে। কাতারভিত্তিক এই সংবাদমাধ্যমটি বলেছে, এটি ইসরায়েলের ইচ্ছাকৃত হামলা।
এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমটি বলেছে, 'এসব ঘৃণ্য অপরাধের জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহির আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, সরকার ও মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘের প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।' সেই সাথে সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু ও হত্যা বন্ধেরও দাবি জানায় গণমাধ্যমটি।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এই দুই সাংবাদিক এক সন্ত্রাসীর সাথে একই গাড়িতে ছিলেন। ওই গাড়ি থেকে একটি ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফের বিমান হুমকি মনে করায় ওই গাড়িকে লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এতে তারা প্রাণ হারান।
১৬ ডিসেম্বর গাজায় আলজাজিরার এক সাংবাদিক নিহতের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, আইডিএফ কখনোই ইচ্ছা করে সাংবাদিকদের টার্গেট করেনি এবং করবে না।
কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৭৭ জন সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ জনই ফিলিস্তিনি। এছাড়া চারজন ইসরায়েলি ও তিনজন লেবাননের সাংবাদিক।
অন্যদিকে হামাস পরিচালিত গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস বলছে, এই দুই সাংবাদিক নিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০৯ জনে।
আলজাজিরার ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, ওয়ায়েল আল-দাহদোহ তার ছেলের লাশের পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন।
ছেলের লাশ দাফন শেষে তিনি বলেছিলেন, গাজার সাংবাদিকরা তাদের কাজ চালিয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, 'পুরো বিশ্বকে দেখা উচিত এখানে কি ঘটছে?'
এর আগে ইসরায়েলি হামলায় স্ত্রী, আরেক ছেলে, মেয়ে ও নাতিকে হারিয়েছেন ওয়ায়েল আল-দাহদোহ।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আল-দাহদোহের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।