গাজায় যুদ্ধবিরতি: হামাসের শর্ত প্রত্যাখ্যান নেতানিয়াহুর
কয়েক মাসের মধ্যেই গাজায় 'পূর্ণ বিজয়' আসছে দাবি করে হামাসের যুদ্ধবিরতির শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েল-সমর্থিত একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের দেওয়া কয়েকটি দাবির জবাবে এ কথা বলেন নেতানিয়াহু।
হামাসের প্রস্তাবকে 'উদ্ভট' উল্লেখ করে নেতানিয়াহু বলেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠীটির সঙ্গে আলোচনা 'এগোচ্ছে না'।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পূর্ণ ও চূড়ান্ত বিজয় ছাড়া আর কোনো সামধান নেই। গাজায় যদি হামাস টিকে থাকে, তাহলে পরবর্তী নির্বিচার হত্যাকাণ্ড স্রেফ সময়ের ব্যাপার।'
হামাসের পাল্টা প্রস্তাবে ইসরালের প্রতিক্রিয়া দেখানো প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু নেতানিয়াহু যা বলেছেন, তা সরাসরি তিরস্কার। হামাসের শর্তে যুদ্ধ শেষ করার প্রচেষ্টাকে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য মনে করছেন।
হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, নেতানিয়াহুর মন্তব্য 'এক ধরনের রাজনৈতিক বাহাদুরি'। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী যে এ অঞ্চলে সংঘাত চালিয়ে যেতে চান, তা-ই মন্তব্যের মাধ্যমে বুঝিয়ে দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন জুহরি।
মিসরের একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে জানিয়েছেন, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় বৃহস্পতিবার কায়রোতে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবগুলো নিয়ে নতুন পর্বের আলোচনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় নমনীয়তা দেখাতে মিসর সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বলে জানান তিনি।
যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাস পাল্টা তিনটি প্রস্তাব দিয়েছে। তিন ধাপে যুদ্ধবিরতির কথা বলেছে হামাস:
প্রথম ধাপ: ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। এই সময়ে ইসরায়েলের কারাগারগুলোতে বন্দি সব ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্তির বিনিময়ে হামাস সব ইসরায়েলি নারী ও ১৯ বছরের কম বয়সি সব পুরুষ এবং বয়স্ক ও অসুস্থ জিম্মিকে মুক্তি দেবে। গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী সরে যাবে। হাসপাতাল ও শরণার্থী শিবিরগুলোর পুনর্নির্মাণ শুরু হবে।
দ্বিতীয় ধাপ: ফিলিস্তিনি কারাবন্দির মুক্তি এবং ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি গাজা ছেড়ে যাওয়ার পর অবশিষ্ট পুরুষ ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
তৃতীয় ধাপ: উভয়পক্ষ মৃতদেহ এবং অন্যান্য সবকিছু বিনিময় করবে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। এর জবাবে ওই দিন থেকেই গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। তারপর থেকে চার মাস ধরে ইসরায়েলের অবিরাম হামলায় গাজায় ২৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে অন্তত ৬৫ হাজার।