নওয়াজের মুসলিম লীগ ও বিলাওয়ালের পিপলস পার্টির জোট সরকার গঠনের ঘোষণা
পাকিস্তানে জোট সরকার গঠনে নওয়াজ শরীফের মুসলিম লীগ (পিএমএল) ও বিলাওয়াল ভুট্টোর পিপলস পার্টি (পিপিপি) ঐক্যমতে পৌঁছেছে। সেক্ষেত্রে নওয়াজ শরীফই হতে পারে দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। খবর বিবিসির।
মুসলিম লীগ ও পিপলস পার্টির জোটবদ্ধ হওয়ার ঘটনা অবশ্য পুরোনো। ২০২২ সালে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রীত্ব হারানোর পর দল দুটি জোটবদ্ধ হয়ে সরকার গঠন করেছিল।
পিপিপি নেতা আসিফ আলী জারদারি প্রেস কনফারেন্সে জানান, যদিও তার দল ও পিএমএল একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচনে লড়েছে। তবে দেশের স্বার্থে দল দুটি একত্রিত হচ্ছে।
জারদারি আরও বলেন, "এটা জরুরি নয় যে, আমরা সবসময় একে অপরের বিরুদ্ধে লড়ে যাবো।"
এদিকে পিএমএল-এর পক্ষ থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কথা বিবেচনা করে দুই দল জোটবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে নির্বাচনে ইমরানের পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২৬৬ টি আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৩ টি আসনে জয়লাভ করেছে।
অন্যদিকে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের পাকিস্তান মুসলিম লীগ ৭৫ টি আসনে জয়লাভ করেছে; যা দল হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ধারণা করা হচ্ছে যে, দেশটির সেনাবাহিনী নওয়াজকে পেছন থেকে সমর্থন দিচ্ছে। যদিও দেশে ফেরার আগে পাঁচ বছর ধরে তিনি নির্বাসনে ছিলেন।
আর বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বে থাকা পাকিস্তান পিপলস পার্টি ৫৪ টি আসনে জয়লাভ করেছে। যা একক দল হিসেবে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
তবে এককভাবে সরকার গঠন করতে প্রয়োজন ১৬৯ টি সিট। এতে করে কে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে সেই বিষয়ে এখনো ধোঁয়াশা কাটেনি।
দেশটির সংবিধান অনুযায়ী ভোটগ্রহণের দিন থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে সরকার গঠন করতে হবে। ফলে ২৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নতুন সরকার পেতে যাচ্ছে দেশটি।
দেশটির সংসদে মোট আসন রয়েছে ৩৩৬ টি। যার মধ্যে ২৬৬ টি আসনে সরাসরি নির্বাচন হয়। আর বাকি ৭০ টি আসনের মধ্যে ৬০ টি আসন নারীদের জন্য ও ১০ টি আসন অমুসলিমদের জন্য সংরক্ষিত। সেক্ষেত্রে এই সংরক্ষিত আসনগুলো সংসদে দলগুলোর শক্তিমত্তার ওপর ভিত্তি করে দলগুলোকে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
পিএমএল-এন সদস্য মরিয়ম আওরঙ্গজেবের মতে, নওয়াজ শরীফ তার ভাই শেহবাজকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনীত করার পরিকল্পনা করছেন। দুজনই এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
যদিও ভুট্টো আগে বলেছেন যে, তার দল একজন পিএমএল থেকে একজনকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে সহায়তা করবে।
এদিকে ইমরান খান এবং তার দলের জোর দাবি, নির্বাচনে তাদের বিরুদ্ধে ফলাফল কারচুপি হয়েছে এবং তারা ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার পরিকল্পনা করছে।
তিনি বলেন, "চুরির ভোটে সরকার গঠনের দুঃসাহসিকতার বিরুদ্ধে সতর্ক করছি। দিনদুপুরে এই ধরনের ডাকাতি শুধু নাগরিকদের অসম্মান করবে না। বরং দেশের অর্থনীতিকে আরও নিচের দিকে ঠেলে দেবে।"
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান