জনপ্রিয় মাউন্ট ফুজিতে চড়তে হলে দিতে হবে অর্থ, সুযোগ পাবে সীমিত সংখ্যক মানুষ
মাউন্ট ফুজিতে উঠার সবচেয়ে জনপ্রিয় ট্রেইল (পথ) ব্যবহার করার জন্য এখন থেকে খরচ করতে হবে ১৩ মার্কিন ডলার। জাপানের বিখ্যাত আগ্নেয়গিরিতে মানুষের চাপ কমাতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
গতবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে ২ লাখ ২০ হাজারের বেশী মানুষ মাউন্ট ফুজিতে আহরণ করেছে।
কিন্তু অতিরিক্ত মানুষের চাপ, দুর্ঘটনার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া এবং আবর্জনা বেড়ে যাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।
এই বছর থেকে শুধু ৪ হাজার মানুষ প্রতিদিন ইয়োশিদা ট্রেইল ব্যবহার করে মাউন্ট ফুজিতে উঠার অনুমতি পাবেন।
রাজধানী টোকিও থেকে এই ট্রেইলটি ব্যবহার করা যায় বলে ৬০ শতাংশের বেশী আহরণকারী এটি ব্যবহার করে থাকেন।
পাশাপাশি বিকাল ৪টা থেকে ভোর ২টার মধ্যে কেউ পাহাড়ে উঠার অনুমতি পাবে না।
অনেকেই দীর্ঘদিন থেকে মাউন্ট ফুজিতে মানুষের চাপ এবং আবর্জনার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে সতর্ক করে আসছিলেন। ইয়ামানাশি প্রিফেকচারের কর্মকর্তা মাসাতাকে ইজুমি জানিয়েছেন, গত সেপ্টেম্বরে এই অঞ্চলে মানুষের চাপ অনেক বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হয়েছিল।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ জানিয়েছে, তাদেরকে বাধ্য হয়ে মানুষের ফেলে যাওয়া আবর্জনা পরিষ্কার করতে হচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গত বছর সিজুকা প্রিফেকচারের পুলিশকে ৬১টি উদ্ধার কাজ চালাতে হয়েছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, অধীকাংশই উচ্চতার জন্য অথবা হাইপোথার্মিয়ার (শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়া) জন্য অসুস্থ বোধ করায় পুলিশকে গিয়ে তাদের উদ্ধার করতে হয়েছে। পাশাপাশি অনেকেই ঠিকঠাক পাহাড়ে উঠার সরঞ্জাম বহন না করায় ইউনেস্কোর এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই সবকিছু বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ নতুন নিয়ম করেছে যেগুলো ইয়ামানশির স্থানীয় সরকার অনুমোদন দিয়েছে। আগামী ১ জুলাই থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর করা হবে।
স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তা তোশিয়াকি কাসাই বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, "কোভিডের পর মানুষের ভীর অনেক বেড়ে গেছে। আমরা চাই তারা ঠিকঠাক প্রস্তুতি নিয়ে এবং সঠিক পোশাক (পাহাড়ে উঠার পোশাক) পরিধান করে পাহাড়ে আসুক।"
কিন্তু মাউন্ট ফুজিই প্রথম স্থান নয় যেখানে দর্শনার্থীদের জন্য নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে। গতবছর ইতালির ভেনিসে প্রাথমিকভাবে প্রতি দর্শনার্থীর জন্য ৫ ইউরো ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি থাইল্যান্ডের একটি দ্বীপে কয়েক বছরের জন্য দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে যাতে সেটিকে ঠিকমতো পুনরুদ্ধার করা যায়।
ইতোমধ্যেই ২০২৩ সালে অনেক পর্বতারোহীর মৃত্যুর পরে মাউন্ট এভারেস্টে উঠার জন্য পর্বতারোহীদের দেওয়া অনুমতির সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।
ক্রমবর্ধমান পর্যটন শিল্পের জন্য জাপানকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ২০১৯ সালে কিয়োটোর কর্মকর্তারা দর্শনার্থীদের ঐতিহাসিক জিওন কোয়ার্টারে কীভাবে আচরণ করতে হবে তা মনে করিয়ে দিতে লিফলেট দেওয়া শুরু করেছিলেন।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়