ভারতের ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন কত বড়? এই সাতটি সংখ্যায় জেনে নিন
বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে চলছে সাধারণ নির্বাচনের তোড়জোড়। দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম রাষ্ট্র শাসনের ভার কাদের হাতে থাকবে– পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ তথা লোকসভা নির্বাচনে জয়-পরাজয় সেটি নির্ধারণ করবে।
গতকাল শনিবার (১৬ মার্চ) ভারতের নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। ভোটাধিকার প্রয়োগের এই সুবিশাল আয়োজন আকারে ও গণতন্ত্র চর্চার হিসেবে বিশ্বে অদ্বিতীয়।
২০১৯ সালের মতোই সাত দফায় হবে ভারতের অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন। আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে ১ জুন শেষ হবে। মোট ৫৪৩টি লোকসভা আসনে এ নির্বাচনের পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচন হবে চার রাজ্যে। একইসঙ্গে বিধানসভা উপনির্বাচন হবে ১৩টি রাজ্যে। ভোট গণনা ও ফল প্রকাশিত হবে ৪ জুন।
কিন্তু, আক্ষরিক অর্থেই আসমুদ্র হিমাচল ব্যাপ্তি এ আয়োজনের। হিমালয় পাদদেশের প্রদেশ থেকে দক্ষিণে ভারত মহাসাগরের কোলঘেঁষা রাজ্য, পূর্বাঞ্চলের পাহাড়শ্রেণি থেকে পশ্চিমের উষর মরুভূমি আর বড় বড় সব মহানগরীর কংক্রিটের জঙ্গল থেকে প্রত্যন্ত দুর্গম ছোট্ট গ্রাম– ব্যালট পৌঁছাবে সবখানে। মোট ভোটার প্রায় ৯৭ কোটির বেশি, যা বিশ্বে সর্বোচ্চ।
এক কথায় ভারতের নির্বাচন যেমন বিশাল, তেমনি নানান রাজনৈতিক সমীকরণ আর ভোটের প্রচারণায় রঙিন আর জটিল এর সমস্ত আয়োজন।
যে সাতটি দিক দিয়ে এ নির্বাচনের আকার তুলনাহীন– তা নিচে তুলা ধরা হলো।
৮২ দিন ধরে চলবে নির্বাচন প্রক্রিয়া
শনিবার (১৬ মার্চ) তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, ৪ জুন ভোটের ফল আগপর্যন্ত যা ৮২ দিন ধরে চলবে। লোকসভার ভোট হবে সাত দফায়। শনিবার দুপুরে ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
তফসিল ঘোষণার ফলে এখন সব রাজনীতিবিদকে নির্বাচনি বিধি মেনে চলতে হবে। এমনকী ভোটারদের প্রভাবিত করবে এমন নতুন কোনো নীতি কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করতে পারবে না– এমনটাও রয়েছে নির্বাচনি বিধিতে।
ভারতের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) রাজীব কুমার জানান, লোকসভা নির্বাচনের পাশাপাশি অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল প্রদেশ, সিকিম ও উড়িষ্যায় বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রথম দফার ভোটের দিন ১৯ এপ্রিল, এরপর ২৬ এপ্রিল, ৭ মে, ১৩ মে, ২০ মে, ২৫ মে এবং ১ জুন সবশেষ দফার ভোট হবে। লোকসভা আসন কম এমন কয়েকটি রাজ্যে মাত্র একদিনই ভোট হবে। কিন্তু, যেসব রাজ্যে আসন বেশি সেখানে কয়েক দফায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভারতের জনসংখ্যা; তার সাথে সাথে নির্বাচনের সময়ও দীর্ঘ দিয়েছে। যেমন ১৯৮০'র দশকে ভোটের পুরো সময়টা ছিল মাত্র চারদিন, ২০১৯ সালে হয় ৩৯ দিনব্যাপী, আর ২০২৪ সালে এসে তা হচ্ছে ৪৪ দিনব্যাপী।
ভারতের সাবেক মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এন গোপালস্বামী বলেন, একাধিক দফায় ভোট গ্রহণের মূল কারণ হলো— নির্বাচনকে সামনে রেখে বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করতে হয়। নির্বাচনি সহিংসতা প্রতিরোধ থেকে শুরু করে ভোট জালিয়াতি– এসব ঠেকাতেই মাঠপর্যায়ে তারা তৎপর থাকে।
তবে বহুস্তর-বিশিষ্ট হলেই যে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে তাঁর কোনো গ্যারান্টি নেই, কারণ দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনি প্রচারের সুযোগ ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে থাকে বলে মন্তব্য করেন এন ভাস্করা রাও। তিনি নয়াদিল্লি-ভিত্তিক সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজের চেয়ারম্যান। তাঁর সংস্থা ভারতে নির্বাচনী প্রচারণার বিষয়ে গবেষণার অগ্রদূত।
ভাস্করা রাওয়ের মতে, নির্বাচন প্রক্রিয়া আরো সংক্ষেপ করা উচিত। নাহলে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে ক্ষমতাসীনরা আরো বেশিদিন ধরে প্রচারণা চালাতে পারে।
৯৬ কোটি ৯০ লাখ ভোটার
ইউরোপের সবদেশ মিলে যে জনসংখ্যা, তার চেয়েও বেশি ভারতে এবারের ভোটার সংখ্যা।
তাঁরা সাড়ে ১০ লাখ ভোটকেন্দ্রে ৫৫ লাখ ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এর মাধ্যমে ভোট দেবেন। অনেক ভোটকেন্দ্র হবে অতি-দুর্গম। কোনগুলো সুউচ্চ হিমালয়ের তুষারঘেরা পর্বতের কোলে, আবার গা পোড়ানো উষ্ণতার রাজস্থানের মরুর বুকেও চলবে ভোটগ্রহণ। এমনকি ভারত মহাসাগরে খুবই কম জনসংখ্যার দ্বীপপুঞ্জগুলোও বাদ যাবে না।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য দেড় কোটি নির্বাচন কর্মী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করবে নির্বাচন কমিশন। এই কর্মীরা নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে পাড়ি দেবেন শীতল হিমবাহ, আর মরুভূমি। দুর্গম স্থানে পৌঁছাতে কখনো তাঁরা যাবেন উট বা হাতির সওয়ারী হয়ে, কখনোবা নৌকা ও হেলিকপটারে করে। এছাড়া, সড়ক ও রেলপথেও দেশব্যাপী পৌঁছাবে নির্বাচনের উপকরণ।
নির্বাচনি ব্যয় ১৪.৪ বিলিয়ন ডলার
ভারতের লোকসভা নির্বাচন বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল নির্বাচন। ভাস্করা রাও বলেন, এবারে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, অনলাইন-অফলাইন প্রচার-প্রচারণায় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা ব্যয় করতে পারেন এক লাখ ২০ হাজার কোটি রুপি বা ১৪.৪ বিলিয়ন ডলার। অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের এই ব্যয় প্রক্ষেপণ করেছে তাঁর সংস্থা- সেন্টার ফর মিডিয়া স্টাডিজ।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ব্যয় করা হয় ৬০ হাজার কোটি রূপি বা ৭.২ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে এবার তা দ্বিগুণের বেশি হবে। বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ২০২০ সালের প্রতিনিধি পরিষদ ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মোট ব্যয়ও ছিল ১৪.৪ বিলিয়ন ডলার।
তবে ভারতের রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীরা তাঁদের নির্বাচনি ব্যয়ের পুরো হিসাবটা দেন না। হিসাবের বাইরেও নির্বাচনের অনেক অর্থ তাঁরা ব্যয় করেন, যা রয়ে যায় হিসাবের বাইরে। কালো টাকার ব্যবহারের অভিযোগও পুরোনো। বড় দাতারাও (ব্যবসায়ী) গোপনে পছন্দের রাজনৈতিক দলকে তহবিল দেন বলে জানা যায়।
ভারতের সাবেক সিইসি এন গোপালস্বামীর মতে, নির্বাচন কর্তৃপক্ষ নগদ লেনদেন ধরার ক্ষেত্রে বেশ দুর্ব। ফলে টাকা বা অন্য উপহার যেমন মদ বা কাপড় দিয়ে দরিদ্র ভোটারদের ভোট কেনা হয়েছে, এমন অভিযোগ প্রায়ই সামনে আসে।
১৫ হাজার ২৫৬ ফুট উঁচুতে ভোটকেন্দ্র
বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম রাষ্ট্রে ভোটের আয়োজন সহজ কথা নয়। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের সময়ে হাড়কাঁপানো বাতাসের ঝঞ্ঝার মধ্যে দিয়ে নির্বাচন কর্মীদের চারদিন ধরে পাহাড়ি পথ ও নদী উপত্যকা পাড়ি দিতে হয় উত্তরপূর্বের অরুণাচল রাজ্যের মাত্র একটি ভোটকেন্দ্র স্থাপনের জন্য। চীনের সীমান্ত-লাগোয়া অরুণাচলের ওই কেন্দ্রে ভোটার ছিলেন মাত্র একজন। কিন্তু, তিনিও যেন ভোট দিতে পারেন, সেজন্যই এত দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয় কর্মীদের।
এর পেছনে অবশ্য আরেকটি বড় কারণ রয়েছে। চীন অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের বলে দাবি করে, তাই সেখানে সর্বাত্মক ভোট আয়োজনের মাধ্যমে ওই অঞ্চলের ওপর নিজস্ব কর্তৃত্ব দেখানো নয়াদিল্লির জন্য খুবই জরুরী।
এছাড়া, উত্তরের হিমাচল প্রদেশে ১৫ হাজার ২৫৬ মিটার উঁচুতে একটি গ্রামে ভোটকেন্দ্র স্থাপন করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তারা, এটিই বিশ্বের সর্বোচ্চ ভোটকেন্দ্র।
আবার পূর্ব উপকূলের আন্দামার ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ভোটগ্রহণের জন্য নির্বাচন কর্মীরা ঘন ম্যানগ্রোভ জঙ্গল ও কুমির-ভরা জলাভূমি পাড়ি দেন।
উড়িষ্যার মালকানগিরি জেলায় মাওবাদী গেরিলারা এখনও তৎপর। ২০১৯ সালে ভোটগ্রহণের পর তাঁদের হাত থেকে ইভিএম মেশিন রক্ষা করতে নির্বাচন কর্মীরা দুর্গম পাহাড় ও জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সেগুলো নিয়ে আসেন। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর থেকে সতর্কবার্তা পাওয়ার পরে তাঁরা এ উপায় গ্রহণ করেন। গোয়েন্দারা বলেছিলেন, তাঁরা যদি গাড়িতে ইভিএম নিয়ে আসেন, তাহলে মাওবাদীদের হামলার সহজ লক্ষ্যবস্তু হবেন।
দুই হাজার ৬৬০ রাজনৈতিক দল
বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ ভারতে মোট ২ হাজার ৬০০টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে। নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর রয়েছে নিজস্ব প্রতীক– যেমন কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপির প্রতীক পদ্ম, প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের হাত, আর অন্যান্য দলের হাতি থেকে শুরু করে বাইসাইকেল, চিরুনি বা তীর নানাবিধ প্রতীক রয়েছে।
ভারতীয় উপমহাদেশের নির্বাচনি প্রতীক ভোটের মাঠে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা ভারতের বেলাতেও সত্য। দেশটির এক-তৃতীয়াংশ ভোটারই নিরক্ষর, তাই প্রতীক দেখেই তাঁরা কে কোন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী তা বুঝতে পারেন।
২০১৯ সালের লোকসভায় সাতটি জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক দল, ৪৩টি রাজ্য পর্যায়ের রাজনৈতিক দল এবং ৬২৩টি অখ্যাত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নেয়। স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ মোট প্রার্থী ছিলেন ৮ হাজার ৫৪ জন। বিজয়ী ৫৪৩ জনের মধ্যে ৩৯৭ জনই ছিলেন জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক দলগুলোর, ১৩৬ জন রাজ্য পর্যায়ের দলের, ৬ জন ছিলেন অখ্যাত/ নামস্বর্বস্ব দলের এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ৪ জন।
গত নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৯১ কোটি ২০ লাখ, যারমধ্যে ভোট দেন ৬১ কোটি ২০ লাখ। অর্থাৎ, ভোটার অংশগ্রহণের ছিল সর্বোচ্চ বা ৬৭.৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে নারী ভোটারদের অংশগ্রহণের হার ছিল ৬৭.১৮ শতাংশ, যা ভারতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
৩০৩ এর বিপরীতে ৫২ আসন!
লোকসভা নির্বাচনের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী নরেন্দ্র মোদির- ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং প্রায় দুই ডজন শরীক দলের নেতৃত্ব দেওয়া প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রস। তবে বিজেপিও তিন ডজনের বেশি শরীক দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
২০১৯ সালের লোকসভায় ৩০৩ আসনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছিল বিজেপি। এতে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোটের মোট আসন দাঁড়ায় ৩৫৩টিতে। কংগ্রস জিতেছিল মাত্র ৫২ আসনে, আর শরীকদের সাথে যোগ করলে তা দাঁড়ায় ৯১টিতে।
সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি রাজ্য নির্বাচনে জয়ের পর জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রেও শক্ত অবস্থানেই আছে বিজেপি। দলটি এবারও বড় ব্যবধানে জিতবে বলে ভোটারদের মধ্যে পরিচালিত জনমত জরিপগুলো জানাচ্ছে। ভারতের মোট ২৮টি প্রদেশের মধ্যে বর্তমানে ১২টি প্রদেশেই বিজেপির রাজ্য সরকার রয়েছে, অন্যদিকে কংগ্রেসের সরকার চালাচ্ছে তিনটি রাজ্য।
৩৭০ নাকি ৪০৪ আসন!
এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জন্য ৩৭০ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছেন মোদি, ২০১৯ সালের লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও যা ৬৭টি বেশি। আর জোটগতভাবে লোকসভার ৪০০ আসনের দখল চান তিনি।
সবশেষ ১৯৮৪ সালে কোনো রাজনৈতিক দল ৩৭০টির বেশি আসন পেয়েছিল। আর সেটি ছিল কংগ্রেস। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কংগ্রস পার্টি ৪১৪ আসনে জয়লাভ করে।
মোদি এবারেও জিতে পাঁচ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকলে– তিনিই হবেন ভারতের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী রাজনীতিক। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু প্রায় ১৬ বছর ৯ মাস দেশ শাসন করেন, আর তাঁর কন্যা ইন্দিরা গান্ধী দেশ পরিচালনা করেন ১৫ বছর ১১ মাস।