তেল আবিবে হাজারো ইসরায়েলির বিক্ষোভ, নেতানিয়াহুর পদত্যাগ দাবি
হামাসের সঙ্গে গাজা জিম্মি চুক্তির দাবিতে হাজার হাজার ইসরায়েলি দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) হামাসের হাতে জিম্মি ইলাদ কাতজিরের মরদেহ উদ্ধার করার পর তেল আবিবসহ অন্যান্য শহরগুলোতে বিক্ষোভ সমাবেশ করল ইসরায়েলিরা।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা 'এখনই নির্বাচন'-এর দাবিতে এবং 'ইলাদ, আমরা দুঃখিত' স্লোগান দিয়েছেন।
পরে পুলিশ বলপূর্বক তেল আবিবের বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে গাজায় আটক জিম্মিদের পরিবারগুলোও যোগ দেয়। বিক্ষোভকারীরা হামাস ও এর মিত্রদের হাতে গাজায় আটক প্রায় ১৩০ জন জিম্মিকে মুক্ত করতে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।
এর আগে শনিবার (৬ এপ্রিল) আইডিএফ হামাসের হাতে জিম্মি ইলাদ কাতজিরের মরদেহ উদ্ধার করে। জানুয়ারিতে প্রকাশিত একটি জিম্মি ভিডিওতে তাকে জীবিত দেখা গিয়েছিল। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আক্রমণ করে প্রায় ১৫০ জনকে জিম্মি করার সময় কাতজিরকেও আটক করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস।
বিক্ষোভকারী নোয়াম পেরি বিবিসির একজন প্রতিবেদককে বলেন, 'ইলাদ কাতজির তিন মাস বন্দি অবস্থায় বেঁচে ছিলেন। তার আজ আমাদের সাথে থাকা উচিত ছিল। তিনি আজ আমাদের সাথে থাকতে পারতেন।'
আয়োজনকরা বলেছেন, তেল আবিবের বিক্ষোভে ১০ লাখ লোক এসেছেন। তবে অন্যান্য হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ বিক্ষোভে উপস্থিত হয়েছিল।
জিম্মিদের উদ্ধারে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে নিয়মিত সরকারবিরোধী হচ্ছে।
তেল আবিবের বিক্ষোভে ভিড়ের মধ্যে একটি গাড়ি ঢুকে পড়ায় পাঁচজন আহত হয়েছে। গাড়িচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গাজায় ইসরায়েলের আক্রমণ শুরুর ছয় মাস পর রোববার (৭ এপ্রিল) যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর কায়রোতে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছেন আলোচকরা।
কিছু গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিশর, ইসরায়েল ও হামাসের আলোচকদের সঙ্গে সিআইএর পরিচালক বিল বার্নস এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুলরাহমান আল থানি যোগ দেবেন।
ইলাদ কাতজিরের বোন কার্মিট প্যাল্টি কাতজির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে তার ভাইয়ের মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে বলেছেন, ইসরায়েল নতুন যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হলে তার ভাই জীবিত ফিরে আসতে পারতেন।
তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, 'আমাদের নেতারা কাপুরুষোচিত এবং রাজনৈতিক বিবেচনার দ্বারা পরিচালিত। এ কারণেই এখনও এই চুক্তি হয়নি।'
গত অক্টোবর হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হয়। জবাবে গাজায় ইসরায়েলের পালটা আক্রমণে ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে বড় একটা অংশই নারী ও শিশু।