পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জামিন মঞ্জুর, কিন্তু কারাগারেই থাকতে হবে
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে বুধবার (১৫ মে) ইসলামাবাদে জমি সংক্রান্ত একটি দুর্নীতি মামলায় জামিন দেয়া হয়েছে। কিন্তু অন্য দুটি মামলায় তাকে জেলে থাকতে হবে। তার আইনজীবী এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে গত সপ্তাহে এ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি একজন আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে জমিটি উপহার নিয়েছিলেন।
জমি নিয়ে কোনো ধরনের ভুল করেননি বলে দাবি করেছিলেন ইমরান। মামলায় অভিযুক্ত করার পর তিনি ইসলামাবাদ হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন।
ইমরানের দলীয় আইনজীবী নাঈম হায়দার পাঞ্জুথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জামিন মঞ্জুর করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, ইমরান খান এখনই জেল থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না কারণ রাষ্ট্রীয় গোপন নথি ফাঁস ও ইসলামি আইন লঙ্ঘন করে বিয়ের মামলায় তিনি কারাদণ্ড ভোগ করছেন।
৭১ বছর বয়সী ইমরান গত বছরের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। মোট চারটি মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হলেও দুটি মামলায় তার সাজা স্থগিত করা হয়েছে।
২০২২ সালে সংসদীয় অনাস্থা ভোটের মধ্য দিয়ে তাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে অপসারণ করার পর রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সহিংসতা উসকে দেওয়ার অভিযোগ সহ কয়েক ডজন মামলায় তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
তার স্ত্রী বুশরা বিবিও ২০১৮ সালে ইমরানকে বেআইনিভাবে বিয়ে করার মামলায় কারাগারে রয়েছেন।
বুধবার যে মামলায় ইমরানকে জামিন দেওয়া হয়েছিল সেটি আল-কাদির ট্রাস্টের সাথে জড়িত। এটি একটি বেসরকারি কল্যাণ সংস্থা যা ইমরান ও তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন [ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায়]।
প্রসিকিউটররা বলেছেন, ইমরান খান একজন আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে জমি নেওয়ার জন্য ট্রাস্টটি ব্যবহার করেছেন। জমির মধ্যে ইসলামাবাদের কাছে ৬০ একর (২৪ হেক্টর) ও পাহাড়ের চূড়ায় থাকা ইমরানের বিলাসবহুল বাড়ির কাছে আরেকটি বড় জমি রয়েছে।
জামিনের পরে একটি বিবৃতিতে ইমরানের মিডিয়া দল জানিয়েছে, জমিটি ব্যক্তিগত লাভের জন্য ছিল না এবং ইমরান সেখানে একটি 'ধর্মীয় ও বৈজ্ঞানিক' শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন।
খানকে কারাগারে রাখতে এবং ৮ ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়ার জন্য এসব মামলা করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ইমরান বেশ কিছু অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছিলেন। কিন্তু তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসনে জয় লাভ করেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের নেতৃত্বে ইমরানের প্রতিদ্বন্দ্বীরা একটি জোট সরকার গঠন করলেও দলটির সরকার গঠন করার মতো পর্যাপ্ত আসন ছিল না।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়