সৌদির ইতিহাসে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্লেনের অর্ডার হাতছাড়া করলো বোয়িং!
সৌদি আরবের ন্যাশনাল এয়ারলাইন মোট ১০৫টি প্লেনের অর্ডার করেছে। দেশটির এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাসে যা সর্বোচ্চ।
তবে অর্ডারটি বর্তমানে একের পর এক বিতর্কে জড়াতে থাকা বোয়িং কোম্পানি পায়নি। বরং এটি পেয়েছে ইউরোপিয়ান কোম্পানি এয়ারবাস।
সৌদিয়া গ্রুপের ডিরেক্টর জেনারেল ইব্রাহিম আল-ওমর গতকাল (সোমবার) অর্ডারটির ব্যাপারে নিশ্চিত করেন। দেশটি ২০২৬ সালের প্রথমদিকে অর্ডারকৃত প্রথম প্লেনটি পেতে পারে।
রিয়াদে ফিউচার এভিয়েশন ফোরামে এক বক্তৃতায় এয়ারবাসের সাথে চুক্তির কথা জানান আল-ওমর। তিনি বলেন, "সৌদিয়া গ্রুপ আজ সৌদি বিমানের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চুক্তির ঘোষণা করছে।"
গ্রুপটির ওয়েবসাইট অনুসারে, কোম্পানিটির বর্তমান বহরে ৯৩টি এয়ারবাস ও ৫১টি বোয়িং বিমান রয়েছে। ইউরোপীয় বিমান নির্মাতা কোম্পানিটি এক বিবৃতিতে বলেছে, সর্বশেষ চুক্তিটি ৩৯টি বিমানের এয়ারবাস অর্ডারের গ্রুপের বিদ্যমান ব্যাকলগকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
প্রেস রিলিজে ফিউচার এভিয়েশন ফোরাম জানায়, নতুন চুক্তিটি সবমিলিয়ে ১৯ বিলিয়ন ডলারের। আলাদা এক বিবৃতি আল-ওমর জানান, নতুন অর্ডারটি সৌদি আরবের 'ভিশন ২০৩০' বাস্তবায়নে সাহায্য করবে।
ভিশনটির লক্ষ্য তেলের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশের অর্থনীতিকে বৈচিত্র্যময় করা। একইসাথে এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য পর্যটকদের দেশটিকে আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে প্রস্তুত করা।
আল-ওমর বলেন, "ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে সৌদিয়ার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা চারটি মহাদেশে আমাদের বিদ্যমান ১০০-এর বেশি গন্তব্য জুড়ে ফ্লাইট ও আসন ক্ষমতা বৃদ্ধি করছি। ভবিষ্যতে তা আরও সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।"
দেশটির ন্যাশনাল ট্যুরিজম স্ট্রাটেজি অনুসারে, ২০৩০ সালের মধ্যে সৌদিতে প্রতি বছর ১৫০ মিলিয়ন পর্যটক যাতায়াত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সৌদি যখন এয়ারবাসের সাথে চুক্তির ঘোষণা দিল তখন কোম্পানিটির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বোয়িং বেশ কঠিন সময় পার করছে। সম্প্রতি নিরাপত্তা ব্যর্থতাসহ বেশকিছু বিষয়ে তদন্তের মুখোমুখি হয়েছে সংস্থাটি। তবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, সংস্থাটি জলদিই ঘুরে দাঁড়াবে।
৫২৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ৫,৬০০টি বাণিজ্যিক জেটের অর্ডারের ব্যাকলগ থাকা সত্ত্বেও বোয়িং প্রতি বছর লাভের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিমান তৈরি করতে পারছে না। কারণ কোম্পানিটি বর্তমানে গুণগত সমস্যাগুলি সমাধানে কাজ করছে।
এদিকে এয়ারবাস ২০২৩ সালের শেষে প্রায় ৮,৬০০ টি বিমানের অর্ডার ব্যাকলগ থাকার কথা জানিয়েছে। একইসাথে কোম্পানিটি বাৎসরিক ৪.১ বিলিয়ন ডলারের মুনাফা অর্জন করেছে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান