মাত্র এক বছর ১৫২ দিন বয়সেই বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ পুরুষ শিল্পীর স্বীকৃতি পেয়েছে ঘানার বিস্ময়বালক!
মাত্র এক বছর ১৫২ দিন বয়সেই বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ পুরুষ শিল্পীর স্বীকৃতি পেয়েছে ঘানার এস-লিয়াম নানা স্যাম আনক্রাহ।
স্যামের মা শ্যান্টেল কুকুয়া এঘান নিজেই একজন চিত্রশিল্পী। স্যামের স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত এঘান বলেন, "ও এখনই জানে কোন রং এর সাথে কোন রং মেশাতে হয়।"
ইঘান জানিয়েছেন, স্যামের বয়স যখন ছয় মাস তখন তিনি সন্তানের প্রতিভার বিষয়টি টের পান।
গিনেজ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড (জিডাব্লিউআর) কর্তৃপক্ষ পাঁচ মাসের যাচাই শেষে গত সোমবার (২০ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে স্যামকে এ স্বীকৃতি দিয়েছে।
গিনেজ কর্তৃপক্ষ শর্ত দিয়েছিল, রেকর্ডের জন্য যোগ্য বিবেচিত হওয়ার জন্য স্যামকে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত একটি পেশাদার প্রদর্শনীতে অংশ নিতে হবে এবং চিত্রকর্ম বিক্রি করতে হবে।
শর্ত অনুযায়ী, স্যামের কাজ পেশাদার মানদণ্ডে বিবেচিত হওয়ার যোগ্যতা থাকার পাশাপাশি কাজগুলো যে তার নিজের সেটির প্রমাণ থাকতে হত।
স্যাম এর কাজ গত বছরের ডিসেম্বর থেকে এ বছরের জানুয়ারির পর্যন্ত ঘানার রাজধানী আক্রার মিউজিয়াম অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে প্রদর্শন করা হয়েছিল।
প্রদর্শনীতে থাকা স্যামের ১০টি চিত্রকর্মের মধ্যে মধ্যে নয়টি বিক্রি হয়েছিল। এমনকি প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া ঘানার ফার্স্ট লেডি রেবেকা আকুফো আদ্দো কর্তৃক পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল।
এ বছরের জুলাই মাসে দুই বছরে পা ফেলতে যাওয়া এ বিস্ময়বালকের এখন পর্যন্ত ১৫টি চিত্রকর্ম বিক্রি হয়েছে। দ্রুতই স্যামের চিত্রকর্ম নিয়ে একটি নিলামের আয়োজন করা হবে।
কিন্তু শিল্পজগতে স্যামের পদার্পণ ছিল একদমই অপরিকল্পিত। স্যামের মা ইঘানের ভাষ্যমতে, স্যাম হামাগুড়ি দিয়েই এ জগতে প্রবেশ করেছে।
২০২৩ সালে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার একটি কাজ করার সময় ইঘান একটি ক্যানভাসে কিছু রং ছিটিয়ে দিয়ে স্যামকে খেলতে দিয়েছিলেন। উজ্জ্বল রং দেখে আগ্রহী স্যাম ক্যানভাসের ওপর হামাগুড়ি দিয়ে সেটির ওপর একটি চিত্রকর্ম তৈরি করে।
স্যামের প্রথম চিত্রকর্মের তাই নাম দেওয়া হয়েছিল "দ্য ক্রল" (হামাগুড়ি)।
স্যামের চিত্রকর্মগুলোতে এক্রিলিক রং এর সংমিশ্রণে গতিশীল বিমূর্ত (এবস্ট্রাক্ট) চিত্র ফুটে ওঠে। ছেলের চিত্রকর্ম সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইঘান বিবিসিকে জানিয়েছেন, "ওর চিত্রকর্মগুলোতে আবিষ্কারের নেশায় বুঁদ থাকা একজন মানুষের প্রতিচ্ছবি পাওয়া যায়।"
ইঘান আশা করেন, তার ছেলে ঘানাকে বিশ্ব দরবারে প্রতিনিধিত্ব করা শিল্পী আমাওকো বোয়াফোর পদাঙ্ক অনুসরণ করবে। তিনি চান, স্যাম মার্কিন শিল্পী জ্যাকসন পোলক এবং যুক্তরাজ্যের ডেমিয়েন হার্স্টকেও অনুপ্রেরণা হিসেবে বেছে নিক।
ইঘান আশা করেন, স্যাম তার শৈল্পিক প্রতিভাকে আরো সমৃদ্ধ করতে একটি আন্তর্জাতিক বৃত্তি পাবে।
আপাতত স্যামের একটি নিজস্ব স্টুডিও আছে (মায়ের তৈরি করা) যেটিতে সে তার পরবর্তী মাস্টারপিস তৈরি করার জন্য প্রস্তুত।
অনুবাদ: তাসবিবুল গনি নিলয়