জেলে বসেই বিশ্বের ২৪তম শীর্ষ ধনী বাইন্যান্স প্রতিষ্ঠাতা চ্যাংপেং ঝাও; এবং সবচেয়ে ধনী কয়েদি
বলা যায়, কারাদণ্ড একপ্রকার আশীর্বাদই হয়ে এসেছে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ কোম্পানি বাইন্যান্সের প্রতিষ্ঠাতা চ্যাংপেং ঝাওয়ের জন্যে। ইতিমধ্যেই তিনি পরিণত হয়েছেন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কয়েদি এবং ক্রিপ্টোজগতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিতে। এরপর এবার কারাবন্দি থাকা অবস্থায়ই তার সম্পদ বেড়েছে হু হু করে।
ফোর্বস-এর হিসাবে, চ্যাংপেং ঝাওয়ের সম্পদমূল্য এখন ৬১ বিলিয়ন ডলার। এর সুবাদে তিনি পরিণত হয়েছেন বিশ্বের ২৪তম ধনী ব্যক্তিতে। জুলিয়া কচ ও তার পরিবারের পরই বাইন্যান্স প্রতিষ্ঠাতার অবস্থান এখন।
ক্রিপ্টো জগতে ঝাওয়ের পর দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী কয়েনবেজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান আর্মস্ট্রং। দুজনের মধ্যে সম্পদের ব্যবধানটা বিপুল। আর্মস্ট্রংয়ের সম্পদমূল্য এখন ১১ বিলিয়ন ডলার।
চ্যাংপেং ঝাওয়ের এই সম্পদবৃদ্ধি মূলত দুটো কারণে। এক, তার ইকুইটি স্টেকের ৯০ শতাংশই বাইন্যান্সে। সেখানে তার ৩৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। যদিও গত বছরের নভেম্বরে তিনি বাইন্যান্সের সিইওর পদ ছেড়ে দিয়েছেন।
অর্থপাচারবিরোধী মামলায় তিনি দোষ স্বীকার করে নেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ঝাওয়ের ৪.৩ বিলিয়ন ডলার জরিমানা তার কোম্পানিই পরিশোধ করে দেয়।
এসব ঘটনায় অবশ্য চ্যাংপেং ঝাওয়ের ব্যক্তিগত সম্পদের ওপর তেমন প্রভাব পড়েনি। কারণ তাকে ৫০ মিলিয়ন ডলার জরিমান দিতে হয়েছে।
ঝাও দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যের আকারের দিক থেকে ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জে আধিপত্য বিস্তার করেছে বাইন্যান্স। দ্য ব্লক-এর তথ্যানুসারে, ঝাও বাইন্যান্স ছাড়ার পরের ছয় মাসে মোট স্পট মার্কেটে কোম্পানিটির হিস্যা দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ। আর তিনি পদ ছাড়ার আগের দুই মাসে এ বাজারে বাইন্যান্সের হিস্যা ছিল গড়ে ৩৮ শতাংশ।
এছাড়া বিএনবি টোকেনের দরও বেড়েছে। চ্যাংপেং ঝাওয়ের কাছে ১৪৭.৫ মিলিয়ন বিএনবি টোকেন রয়েছে। সম্প্রতি বিএনবির দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ ৭১৪ ডলারে পৌঁছে যায়। ফলে এর মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন পৌঁছে যায় ১১০ বিলিয়ন ডলারে।
বিএনবি বা বাইন্যান্স কয়েন ২০১৭ সালে চালু করা হয়। অর্থ উত্তোলনের এই টুল চ্যাংপেং ঝাও চালু করেছিলেন তার নতুন এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করার জন্য। ক্রিপ্টো প্রজেক্ট চালানো ব্যক্তিরা বিএনবির মতো টোকেন তৈরি করেন। এগুলো স্টকের মতোই ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়।
৪৭ বছর বয়সি চ্যাংপেং ঝাও দুইভাবে তার বিএনবি টোকেন সংগ্রহ করেছেন। ২০১৭ সালে বাইন্যান্স চালু করার পর তিনি ও প্রতিষ্ঠাকালীন দল মোট ২০০ মিলিয়ন বিএনবি সাপ্লাই থেকে ৮০ মিলিয়ন টোকেন পান। ফোর্বসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রথম পাওয়া ৮০ মিলিয়ন টোকেনের মধ্যে কোম্পানিটির কাছে আছে ৪৬.২ মিলিয়ন। বাইন্যান্সের ৯০ শতাংশ মালিকানা ঝাওয়ের কাছে থাকা এর মধ্যে ৪১.৫ মিলিয়ন বিএনবি টোকেন পাবেন তিনি।