বিয়ের পোশাকে বিধিনিষেধ, দক্ষিণ কোরিয়া সংযোগ খুঁজতে মোবাইলে তল্লাশি চালাচ্ছে উত্তর কোরিয়া
দক্ষিণের প্রভাব মোকাবিলায় উত্তর কোরিয়া বিয়ের পোশাক থেকে শুরু করে মোবাইলে তল্লাশি চালিয়ে নাগরিকদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালাচ্ছে। মূলত সেখান থেকে পালিয়ে আসা নাগরিকদের সাক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে দক্ষিণ কোরিয়ার ইউনিফিকেশন মিনিস্ট্রির প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। খবর বিবিসির।
প্রতিবেদনের দেখা যায়, ২২ বছর বয়সী একজনকে দক্ষিণ কোরিয়ার গান শোনা ও সিনেমা দেখার অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গত বছর বিবিসির রিপোর্টেও এমন তথ্য উঠে এসেছিল।
যদিও গত বছরের রিপোর্টকে 'অপবাদ ও বানোয়াট' হিসাবে অভিহিত করেছিল উত্তর কোরিয়া। তবে চলতি বছর প্রকাশিত রিপোর্ট নিয়ে এখনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি কিম জং উনের সরকার।
এদিকে সংবাদ সংস্থা ইয়োনহাপের রিপোর্টে দেখা যায়, ২০২১ সাল থেকে দেশটিতে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশির পরিমাণ বেড়েছে। এক্ষেত্রে কর্মকর্তারা বিদেশি সংস্কৃতির আলামত খুঁজে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, একই যুক্তিতে বিয়েতে সাদা পোশাক পরিধানেও নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে।
অন্যদিকে নাগরিকদের ফোন পর্যন্ত তল্লাশি করা হচ্ছে। সেখানে দক্ষিণ কোরিয়ার কারো সাথে যোগাযোগ রয়েছে কি-না সেটিও যাচাই করা হচ্ছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটিতে সানগ্লাসকে প্রতিবিপ্লবী বস্তু হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কিম জং উনের বাবাও অবশ্য জিনসের মতো নিত্যদিনের পোশাককে প্রতিবিপ্লবী পণ্য হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। তবে এগুলো লঙ্ঘনের জন্য ঠিক কী শাস্তি দেওয়া হচ্ছে সেটা স্পষ্ট নয়।
সবমিলিয়ে উত্তর কোরিয়ায় দমন-নির্যাতন আরও গুরুতর হচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যেমন, ২০২০ সালের দেশটিতে একটি আইনের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার গান, সিনেমা ইত্যাদি দেখা বা বিতরণে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়।
চলতি বছরের রিপোর্টে দেখা যায়, ২২ বছর বয়সি এক কৃষককে দক্ষিণ কোরিয়ার ৭০টি গান ও তিনটি সিনেমা রাখা এবং বিতরণের জন্য জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, দুই কিশোরকে একই ধরনের অপরাধের জন্য কঠোর পরিশ্রমের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দক্ষিণ কোরিয়া রিপোর্টটি এমন সময় প্রকাশ করেছে যখন প্রতিবেশী দেশের সাথে উত্তেজনা বাড়ছে।
এদিকে উত্তর কোরিয়া গত মাস থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই হাজারেরও বেশি আবর্জনা ভর্তি বেশি বেলুন পাঠিয়েছে। যার মধ্যে কয়েকটির ভেতরে পরজীবী পর্যন্ত পাওয়া গেছে। অন্যদিকে গত সপ্তাহে কিম জং উন ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে বৈঠক নিয়েও বেশ উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
উত্তর কোরিয়ায় চলমান নির্যাতন নিয়ে ২০১৮ সাল থেকেই তথ্য সংগ্রহ করছিল দক্ষিণ কোরিয়া। তবে রিপোর্টটি মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো প্রকাশ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আগে উত্তর কোরিয়াকে উস্কানি না দিতে রিপোর্টগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান