গাজার স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত
একটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের কাছে আবাসান শহরে একটি স্কুলের বাইরে তাঁবুতে আশ্রয় নেওয়া ২৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অঞ্চলটির সরকারি মিডিয়া অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খান ইউনিসের পূর্বে আবাসান আল-কাবিরার আল-আওদা স্কুলের গেটের কাছে ইসরায়েলি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলায় অংশ নেওয়া 'হামাসের সামরিক শাখার সন্ত্রাসীকে' লক্ষ্য করে 'সুনির্দিষ্ট হামলা' চালিয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী আবাসান আল-কাবিরা এবং পূর্ব খান ইউনিসের বেশ কিছু এলাকা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।
মূলত খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলীয় গ্রামগুলো থেকে বাস্তুচ্যুত হওয়া বহু ফিলিস্তিনি শরনার্থী আল-আওদা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। হামলার ফলে সেখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পাশাপাশি নারী ও শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। স্কুলের বাইরে তাঁবুতে থাকা বহু মানুষ ইসরায়েলি বিমান হামলায় আহত হয়েছেন।
হামলার পর আবাসান আল-কাবিরা থেকে আহতদের নাসের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাসপাতালের একটি সূত্র থেকে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
গত চার দিনে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহৃত স্কুলে বা তার কাছাকাছি স্থানে এটি চতুর্থ ইসরায়েলি হামলা।
হামাসের রাজনীতিবিদ, পুলিশ কর্মকর্তা এবং যোদ্ধারা স্কুলগুলোকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করায় সেগুলোতে হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গত শনিবার (৬ জুলাই) নুসিরাত শরণার্থী শিবিরে জাতিসংঘ পরিচালিত একটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। স্কুলটিতে প্রায় ২ হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, গত রোববার (৭ জুলাই) গাজা শহরের একটি গির্জা-চালিত স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হয়েছে।
সোমবার (৮ জুলাই) রাতে নুসিরাতের জাতিসংঘ পরিচালিত আরেকটি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে গাজায় অভিযান শুরু করে। এখন পর্যন্ত চলমান সামরিক অভিযানে ৩৮ হাজার ২৪০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। নিহতদের বেশীরভাগ বেসামরিক নাগরিক; অধিকাংশই নারী ও শিশু।