শিগগিরই কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিতে পারেন ওবামা
নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে জো বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম সামনে এসেছে। প্রথমে কিছুটা সংশয় থাকলেও শিগহিরই বর্তমান মার্কিন এই ভাইস প্রেসিডেন্টকে সমর্থন জানাতে যাচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। একইসাথে হ্যারিসের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনের সাথে ওবামার টিম যুক্ত রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে প্রথমদিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে হ্যারিসকে পার্টির অনেক নেতা সমর্থন জানালেও বারাক ওবামা সমর্থন দেননি।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক পোস্ট-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করার মতো সক্ষমতা কমলা হ্যারিসের নেই বলে ওবামা মনে করেন।
বাইডেনের পারিবারিক সূত্র থেকে নিউইয়র্ক পোস্টকে জানানো হয়, "ওবামা হতাশ হয়েছেন কারণ তিনি মনে করেন, হ্যারিস কোনোভাবেই জয়ী হতে পারবেন না।"
সূত্রটি নিউইয়র্ক পোস্টকে জানিয়েছে, ওবামা মনেপ্রাণে চাইছিলেন যাতে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি হলিউড তারকা জর্জ ক্লুনিকে দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমগুলোতে একটি নিবন্ধও লিখিয়েছিলেন— যেটি বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ ছিল।
সূত্রটি জানিয়েছে, ওবামা আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডেমোক্রেটিক পার্টির ন্যাশনাল কনভেনশনে অ্যারিজোনার সিনেটর মার্ক কেলিকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেয়ার ব্যাপারে মনস্থির করেছিলেন। কিন্তু এরমধ্যে বেশিরভাগ ডেমোক্রেটিক নেতা কমলা হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানানোয় ওবামা ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রটি থেকে নিউইয়র্ক পোস্টকে জানানো হয়েছে, ক্ষুব্ধ ওবামা হয়ত ন্যাশনাল কনভেনশনে যোগ দেবেন না। তবে নির্বাচনী প্রচারণায় শীঘ্রই কমলা হ্যারিসের পাশে ওবামাকে দেখা যাবে বলে ওবামার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন এনবিসি নিউজকে জানিয়েছেন।
এদিকে প্রথম নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে নানাভাবে কটাক্ষ করার চেষ্টা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসাথে হ্যারিস নভেম্বরে নির্বাচিত হলে হোয়াইট হাউসে বামপন্থি দখলদারিত্ব 'দশগুণ' বাড়বে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ট্রাম্প বলেন, "হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলে আমাদের দেশ ধ্বংস করে ফেলবে। সে একজন চরম বামপন্থি উন্মাদ।"
একইসাথে বাইডেনের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে হ্যারিস প্রতারণা করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান প্রার্থী বলেন, "সাড়ে তিন বছর ধরে হ্যারিস নির্লজ্জভাবে জো বাইডেনের মানসিক অযোগ্যতা ঢাকতে জনসাধারণের কাছে মিথ্যা বলেছে। তিনি দাবি করেছিলেন যে, উদ্ভ্রান্ত জো একদম সুস্থ আছেন। কিন্তু আমি তা মনে করি না। একদমই সেটা মনে করি না।"
এদিকে নিজের প্রার্থীতা প্রত্যাহারের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করাটা সবচেয়ে বড় সম্মানের উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বাইডেন লিখেছেন, "আমার সরে দাঁড়ানোটা আমার দল, আমার দেশ ও আমার নিজের জন্য সবচেয়ে মঙ্গলজনক।"
গত মাসের শেষের দিকে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম সরাসরি বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ার পর থেকেই বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকে। সেইসঙ্গে তাকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাতে থাকেন ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক নেতা, দাতা ও সমর্থকেরা।
তখন বাইডেন তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ডেমোক্রেটিক পার্টির নির্বাচনি তহবিলে অর্থ না দেওয়ার ঘোষণাও দেন অনেক প্রভাবশালী চাঁদাদাতা।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান