মিয়ানমারের জান্তাবিরোধীদের সঙ্গে আলোচনার নজিরবিহীন প্রস্তাব ভারতের, দাবি সূত্রের
মিয়ানমারের জান্তা-বিরোধী সব রাজনৈতিক ও সামরিক পক্ষগুলোকে নয়াদিল্লিতে একটি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছে ভারত। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে একথা জেনেছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের শীর্ষ জেনারেলদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছে ভারত। অন্যদিকে, পশ্চিমা দেশগুলো সামরিক জান্তার কট্টর সমালোচনা করে। এই অবস্থায়, ভারতের তরফ থেকে এটি উল্লেখযোগ্য এক পদক্ষেপ।
মিয়ানমারের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতা এবং এবিষয়ে অবহিত আরো দুটি সূত্র জানিয়েছে, দেশটির জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) এবং চিন, রাখাইন ও ভারত সীমান্তবর্তী কাচিন সম্প্রদায়ের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে – আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে ভারতে অনুষ্ঠেয় ওই সম্মেলনে যোগদানের আমন্ত্রণ করা হয়েছে।
আরো দুটি সূত্র জানিয়েছে, সম্মেলনের আয়োজন করবে ভারত সরকারের অর্থায়নপুষ্ট সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স (আইসিডব্লিউএ), যার শীর্ষ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর-ও।
সম্মেলনে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারকে আমন্ত্রণ জানানো হবে কি না– সে বিষয়ে তাৎক্ষনিকভাবে জানা যায়নি। সংবিধান ও কেন্দ্রীয় শাসন পদ্ধতি সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু হতে পারে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে আরো বিস্তারিত খোলাসা করেননি তারা।
তবে সম্মেলনের বিষয়ে নিশ্চিত করে জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী- চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুই খার বলেন, "আমরা সেখানে প্রতিনিধিদের পাঠাব। মিয়ানমারের রাষ্ট্রবহির্ভূত শক্তির (নন-স্টেট অ্যাক্টর) সাথে ভারতের আনুষ্ঠানিক সংযোগের এটাই হবে প্রথম ঘটনা। এটি একটি ভালো ও ইতিবাচক পদক্ষেপ।"
এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্রকে ফোন করে রয়টার্স। তবে তিনি তাতে সাড়া দেননি। ভারত সরকার এবং আইসিডব্লিউএ'র পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নয়াদিল্লির ওই সম্মেলনে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের উল্লেখযোগ্য অঞ্চল দখলে রাখা আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমারের সবচেয়ে শক্তিশালী ও সংগঠিত বিদ্রোহী শক্তি– কাচিন ইনডিপেন্ডেন্স আর্মিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
তবে এনইউজি সরকার বা উক্ত দুইটি বিদ্রোহী গ্রুপ সম্মেলনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি।
২০২১ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ চলছে দেশটিতে। ভারতের সাথে মিয়ানমারের ১ হাজার ৬৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এছাড়া, দেশটিতে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্পেও বিনিয়োগ আছে দিল্লির।