হিমবাহ গলে যাওয়ায় বদলে যাচ্ছে সুইজারল্যান্ড-ইতালি সীমান্ত
আল্পস পর্বতমালায় হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে সুইজারল্যান্ড ও ইতালি তাদের সীমান্ত পুনর্নির্ধারণ করতে যাচ্ছে। এই পরিবর্তিত সীমান্তের একটি অংশ মেটারহর্নের নিচে, যা ইউরোপের অন্যতম উঁচু পর্বত। খবর বিবিসি'র।
সুইজারল্যান্ড ও ইতালির সীমান্তের বেশিরভাগ অংশ গ্লেসিয়ার রিডজলাইন বা বরফে আচ্ছাদিত এলাকা দিয়ে তৈরি। কিন্তু হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে এই প্রাকৃতিক সীমানাগুলো পরিবর্তিত হয়েছে, তাই উভয় দেশ এখন সীমান্ত সংশোধনের চেষ্টা করছে। প্লাতো রোজা, ক্যারেল রিফিউজি এবং গোবা দি রোলিন এলাকায় এই সীমান্ত পরিবর্তন হবে, যা মেটারহর্ন ও জারম্যাটের নিকটে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সুইজারল্যান্ড এই পরিবর্তন সংক্রান্ত একটি চুক্তি অনুমোদন করেছে, তবে ইতালি এখনও তা অনুমোদন করেনি। উভয় দেশ চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরই সীমান্ত পরিবর্তন কার্যকর হবে। ২০২৩ সালের মে মাসে একটি যৌথ সুইস-ইতালীয় কমিশনের দ্বারা প্রস্তাবিত খসড়া চুক্তির মাধ্যমে এই সীমান্ত সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
গত সেপ্টেম্বরে সুইস গ্লেসিয়ার মনিটরিং নেটওয়ার্ক (গ্লামোস) এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২৩ সালে সুইজারল্যান্ডের হিমবাহ ৪ শতাংশ বরফ হারিয়েছে, যা ২০২২ সালের রেকর্ড ৬ শতাংশ ক্ষতির পর দ্বিতীয় বৃহত্তম। উষ্ণ গ্রীষ্ম এবং কম তুষারপাতকে এই ক্ষতির কারণ বলে উল্লেখ করেছে গ্লামোস। গবেষকরা সতর্ক করেছেন, এই আবহাওয়া চলতে থাকলে হিমবাহের গলন আরও বাড়বে।
সুইজারল্যান্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন সীমান্ত উভয় দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছে। সীমান্ত স্পষ্ট হলে উভয় দেশকে প্রাকৃতিক এলাকার রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নির্ধারণ করতে সহায়তা করবে।
গত বছর গ্লামোস সতর্ক করে জানায়, কিছু সুইস হিমবাহ এত দ্রুত গলছে যে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্যারিস চুক্তির ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমার মধ্যে থাকলেও সেগুলো রক্ষা করা সম্ভব নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানো না হয়, তাহলে অ্যালেটশের মতো বড় হিমবাহ যা সীমান্তের অংশ নয়—এক প্রজন্মের মধ্যে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন