পরিবারের টানে বাস চুরি করে উ. কোরিয়ায় ফেরার চেষ্টা, ধরা পড়ে কারাগারে
উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে এসেছিলেন প্রায় এক দশক আগে, চেয়েছিলেন একটি চুরি করা বাসে করে আবার নিজের দেশে ফিরে যাবেন। তবে শেষ রক্ষা হলো না আর, ধরা পড়ে ওই ব্যক্তি এখন শ্রীঘরে।
গিয়ংগি বুকবু প্রাদেশিক পুলিশ জানায়, টোংইল ব্রিজের ওপর দিয়ে প্রায় ৮০০ মিটার চালানোর পর ওই ব্যক্তি ব্যারিকেডে ধাক্কা খেয়ে থেমে যান। এই ব্রিজটি সীমান্তের শেষ চেকপয়েন্ট, যেখানে বেসামরিক নাগরিকরা কোনো বিশেষ অনুমতি ছাড়াই যেতে পারেন।
তবে এলাকাটি কড়া সামরিক নজরদারিতে থাকে, কারণ এটি দুই কোরিয়ার মধ্যে বিভাজক রেখা, বিশ্বের সবচেয়ে সুরক্ষিত সীমান্তগুলোর একটি।
৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ২০১১ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে আসার পর থেকে সেখানে দিনমজুর হিসেবে কাজ করছিলেন, তার স্থায়ী কোনো ঠিকানা ছিল না।
পুলিশের প্রকাশিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, শর্টস এবং হুডি পরা এই ব্যক্তি পার্ক করে রাখা বাসের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছেন। কিছু বাস পরীক্ষা করার পর তিনি একটি বাস নিয়ে চলে যান। সেই বাস দিয়েই তিনি সীমান্ত পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করেন।
পুলিশের ভাষ্যে, তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় একা বসবাস করতেন এবং আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় থিতু হতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং পরিবারের কথা মনে পড়ায় আবার ফেরত যেতে চেয়েছিলেন তিনি।
১৯৫৩ সালে কোরীয় যুদ্ধের অবসানের পর থেকে পর্যন্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি উত্তর কোরিয়ান নাগরিক দক্ষিণ কোরিয়ায় পালিয়ে এসেছেন। তাদের মধ্যে গত এক দশকে প্রায় ৩০ জন আবার উত্তর কোরিয়ায় ফিরে গেছেন।
ভিন্নমতালম্বী এবং অধিকার কর্মীদের মতে— কিছু উত্তর কোরীয় নাগরিকদের এভাবে ফেরার চেষ্টা, দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজে তাদের মানিয়ে নেওয়া কতটা কঠিন সেটি-ই প্রমাণ করে।
পুলিশ জানায়, নাম প্রকাশ না করা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গাড়ি চুরি, বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালানো, সামরিক ঘাঁটি সুরক্ষা আইন লঙ্ঘন এবং জাতীয় নিরাপত্তা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত চলছে।
তবে, এটি প্রথমবার নয় যে কোনো উত্তর কোরীয় ভিন্নমতালম্বী এই ব্রিজ দিয়ে ফেরার চেষ্টা করেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এমন অন্তত তিনটি ব্যর্থ প্রচেষ্টা হয়েছে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এক নারী পায়ে হেঁটে এই ব্রিজ পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করলেও আটক হন। ২০১৮ সালের আগস্টে এক ব্যক্তি গাড়ি চালিয়ে চেকপয়েন্ট অতিক্রম করেন কিন্তু যৌথ নিরাপত্তা এলাকায় এসে আটক হন।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন