হামাসের হাতে জিম্মি প্রতি ইসরায়েলির মুক্তির জন্য ৫০ লাখ ডলার করে দেবেন নেতানিয়াহু
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) ঘোষণা করেছেন, হামাসের হাতে গাজায় বন্দি থাকা জিম্মি ইসরায়েলিদের মুক্তি দিতে সহায়তাকারীদের জন্য ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার দেয়া হবে। এছাড়া, বন্দিদের মুক্ত করতে যারা সহায়তা করবেন তাদের ও তার পরিবারকে নিরাপদে গাজা ত্যাগের সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, "যারা এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে চান, আমি বলছি: যে আমাদের কাছে একজন জিম্মি ফিরিয়ে দেবে, সে এবং তার পরিবার নিরাপদে বেরিয়ে যাওয়ার পথ পাবে। আমরা প্রতি জিম্মির জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার করে দেব।"
তিনি আরও বলেন, "পছন্দ আপনার, তবে ফলাফল একটাই। আমরা সবাইকে ফিরিয়ে আনব।"
গাজার কেন্দ্রীয় নেটজারিম করিডোরে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাজের সঙ্গে কথা বলার সময় নেতানিয়াহু সতর্ক করেন যে, জিম্মিদের ক্ষতি করলে চরম মূল্য দিতে হবে।
তবে সমালোচকেরা অভিযোগ করেছেন যে, নেতানিয়াহু ইচ্ছাকৃতভাবে জিম্মি মুক্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনায় দেরি করছেন, যাতে যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হয় এবং তার ক্ষমতা ধরে রাখা সহজ হয়। এই অভিযোগ নেতানিয়াহু অস্বীকার করেছেন।
এদিকে, গাজায় বন্দি থাকা একজন জিম্মি মাতান জাংগাউকারের মা আইনাভ জাংগাউকার নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী জিম্মিদের জীবন নিয়ে বাণিজ্য করছেন। হামাসকে টাকার প্রস্তাব দিয়ে তিনি গাজায় বিভাজনের চেষ্টা করছেন, যা জিম্মিদের আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।"
তিনি আরও যোগ করেন, 'এটা অবিশ্বাস্য যে, যিনি আগে হামাসকে অর্থায়ন করেছিলেন, তিনি আবারও তাদের টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন।'
উল্লেখ্য, নেতানিয়াহু ২০১৮ সালে কাতারের মাধ্যমে হামাসকে অর্থ পাঠানোর এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন, এটি দক্ষিণ ইসরায়েলের গ্রামগুলোতে শান্তি ফিরিয়ে আনার এবং গাজায় মানবিক বিপর্যয় রোধের কৌশল ছিল।
তবে আইনাভ বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর এই কৌশল দেখে আমি বুঝতে পারছি যে, তিনি জিম্মিদের বাঁচানোর কোনো ইচ্ছা রাখেন না। তিনি শুধু রাজনৈতিক সুবিধার জন্য সময়ক্ষেপণ করছেন।'
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক হামলায় ইসরায়েলে ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে অপহরণ করা হয়। এর মধ্যে ৯৭ জন এখনও গাজায় আটক রয়েছেন, যাদের মধ্যে কমপক্ষে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।