সামরিক আইন ঘোষণার জন্য ক্ষমা চাইলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল সামরিক আইন ঘোষণার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন এবং পুনরায় এমন কোনো আদেশ জারি হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। খবর বিবিসি'র।
যদিও এই পদক্ষেপের জন্য তাকে অভিশংসনের মুখোমুখি হতে হতে পারে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে সামরিক আইন ঘোষণা করার পর তা দ্রুত জাতীয় সংসদে বাতিল হয়ে যায়। ইউনের দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) নেতা হান ডং-হুন বলেছেন যে ইউনের পক্ষে তার দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, 'তার আগাম পদত্যাগ অনিবার্য হয়ে পড়েছে'।
প্রেসিডেন্ট ইউন একটি সংক্ষিপ্ত টেলিভিশন ভাষণে বলেন, 'আমি অত্যন্ত দুঃখিত এবং এই পদক্ষেপে যারা হতবাক হয়েছেন তাদের কাছে আন্তরিকভাবে ক্ষমা চাইছি। সামরিক আইন ঘোষণার বিষয়ে আমি কোনো আইনগত বা রাজনৈতিক দায়িত্ব এড়িয়ে যাব না।'
তবে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেননি, বরং পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার কাজ তার দলের উপর ন্যস্ত করার কথা বলেন। তিনি অভিশংসনের বিষয়েও কোনো মন্তব্য করেননি।
বিরোধী দল শনিবার অভিশংসনের প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ৩০০ আসনের সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ইউনের দলের অন্তত আটজন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন হবে।
বিরোধী নেতা লি জা-মিউং বলেন, 'রাষ্ট্রপতির মন্তব্য জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও বিশ্বাসঘাতকতার অনুভূতি আরও বাড়াবে। দেশের প্রধান ঝুঁকি এখন রাষ্ট্রপতির অস্তিত্ব।'
ইউনের পদক্ষেপে সাধারণ জনগণের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সিউলের নামদেমুন বাজারের এক মাছ বিক্রেতা ইয়াং সুনসিল বলেন, 'আমি আর তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে বিশ্বাস করি না। আমাদের শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।'
আরেক ক্রেতা হান জুংমো বলেন, 'ক্ষমা যথেষ্ট নয়। তাকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে হবে অথবা অভিশংসিত হতে হবে।'
মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রপতি ইউন 'রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি' ও উত্তর কোরিয়ার হুমকির কথা বলে সামরিক আইন ঘোষণা করেন। তবে শিগগিরই পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এই সিদ্ধান্ত তার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমস্যার কারণে নেওয়া হয়েছিল।
অসংখ্য আইনপ্রণেতা ব্যারিকেড ও নিরাপত্তা বাহিনীকে অতিক্রম করে সংসদে প্রবেশ করেন এবং তার আদেশ বাতিল করেন।
প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপের আগে থেকেই তার জনপ্রিয়তা ছিল নিম্নমুখী। দুর্নীতির অভিযোগ এবং বিরোধী দলের প্রভাবাধীন সংসদ তাকে কার্যত অসহায় অবস্থায় ফেলে দিয়েছিল।