সিরিয়ায় রুশ ঘাঁটির নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিল আসাদবিরোধীরা
সিরিয়ায় সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারকে উৎখাতকারী সরকারবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী ও জিহাদিরা সেদেশে অবস্থিত রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি এবং কূটনৈতিক ফাঁড়ির নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছে। রুশ বার্তাসংস্থা তাস'কে এ তথ্য জানিয়েছে ক্রেমলিন সূত্র।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) তাস'কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্রেমলিন সূত্র জানায়, "রুশ কর্মকর্তারা সিরিয়ার সশস্ত্র বিরোধী প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা (প্রতিনিধিরা) সিরিয়ার ভূখণ্ডে রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি এবং কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।"
"আমরা সিরিয়ার জনগণের স্বার্থ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য রাশিয়া ও সিরিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক সংলাপ অব্যাহত রাখার আশা প্রকাশ করছি," জানায় সূত্র।
এর আগে, স্থানীয় সময় রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে সিরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ তার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে করে রাজধানী দামেস্ক ছেড়ে পালিয়েছেন বলে জানায় বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
দেশটির একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা তাদের কর্মকর্তাদের নিশ্চিত করেছেন যে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসন শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে বিদ্রোহীরাও জানান, দামেস্ক এখন 'আসাদ মুক্ত'। তারা রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করেছেন। সেখানে সেনা সদস্যদের কোনো উপস্থিতি দেখা যায়নি।
২০১৫ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে রাশিয়া। ইসলামিক স্টেট-সহ (আইএস) অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনতে সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে সাহায্য করে আসছিল দেশটি।
এ লক্ষ্যে ২০১৫ সালে সিরিয়ার লাতাকিয়ায় খেমেইমিম বিমান ঘাঁটি নির্মাণ শুরু করে রাশিয়া। সেই থেকে রুশ বিমান বাহিনী সিরিয়ায় আইএস-সহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাতে এবং অস্ত্র সরবরাহ ও পরিবহন করতে এই ঘাঁটি ব্যবহার করে আসছিল।
খেমেইমিম বিমান ঘাঁটিটি সিরিয়ার টার্টাসে রুশ নৌ-ঘাঁটি থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। টার্টাসে রাশিয়ার এই নৌ-ঘাঁটি ১৯৭১ সালে নির্মাণ করেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া)। পরে ২০১৭ সালে রাশিয়া পুনরায় এই নৌ-ঘাঁটি ৫০ বছরের জন্য লিজ নেয় সিরিয়ার কাছ থেকে। চুক্তি অনুযায়ী, নৌ-ঘাঁটিটির ওপর পূর্ণ সার্বভৌমত্ব রয়েছে রাশিয়ার। এই ঘাঁটিতে রুশ নৌবাহিনীর অন্তত ১১টি জাহাজ ভেড়ার অনুমতি রয়েছে।
এদিকে, রোববার বিদ্রোহীরা দামেস্কের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় উভয় ঘাঁটিতে 'হাই অ্যালার্ট' (উচ্চ সতর্কতা) জারি করেছিল রাশিয়া। পরে অবশ্য রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে ঘাঁটি দুটোর নিরাপত্তায় তেমন গুরুতর কোনো হুমকি নেই।