রাশিয়া সিরিয়ার ফ্রন্টলাইন থেকে পিছিয়ে আসছে, তবে ঘাঁটি ছেড়ে যাচ্ছে না
সিরিয়ায় উত্তরাঞ্চলের যুদ্ধক্ষেত্র এবং আলাওয়াইত পর্বতমালার নিরাপত্তা চৌকিগুলো থেকে সেনাদের সরিয়ে নিচ্ছে রাশিয়া। তবে সিরিয়ায় দুটি প্রধান রুশ ঘাঁটি থেকে তাদেরকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে না। আসাদ সরকারের পতনের পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিরিয়ার চারজন কর্মকর্তা এমন তথ্য জানান বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে।
সিরিয়ার পতিত স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদ ছিলেন রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র। তার পিতা হাফিজ আল-আসাদের শাসনামলেও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে গেল সপ্তাহে বাশার আল-আসাদের সরকার পতনের পর দেশটিতে রুশ সেনারা অবস্থান করবে কিনা– তা নিয়ে জল্পনাকল্পনা শুরু হয়।
মস্কোর সাথে সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ সামরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল স্নায়ুযুদ্ধের সময়েই। সিরিয়ার রাশিয়ার একটি প্রধান নৌঘাঁটি ও বৃহৎ একটি বিমানঘাঁটি রয়েছে। এই দুটি ঘাঁটি হলো– লাতাকিয়ায় হামেইমিম বিমানঘাঁটি এবং তারতুসের নৌঘাঁটি।
গত শুক্রবার স্যাটেলাইটে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হামেইমিম ঘাঁটিতে কমপক্ষে দুটি আন্তোনভ এএন-১২৪এস মালবাহী উড়োজাহাজ দাঁড়িয়ে আছে। দেখে মনে হচ্ছে মালামাল তোলার জন্য এগুলোকে প্রস্তুত করা হচ্ছে। আন্তোনভ এএন-১২৪এস উড়োজাহাজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় পণ্যবাহী উড়োজাহাজগুলোর একটি।
এরমধ্যে অন্তত একটি বিমান গতকাল শনিবার সিরিয়া থেকে লিবিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে – বলে জানান ঘাঁটির বাইরে মোতায়েন করা সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা।
রুশ সেনাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকা সিরীয় সামরিক ও নিরাপত্তা সূত্রগুলো রয়টার্সকে বলেছে, মস্কো তার বাহিনীকে সম্মুখযুদ্ধের ক্ষেত্র থেকে প্রত্যাহার করছে। তারা কিছু ভারী সরঞ্জাম এবং সিরিয়ার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদেরও প্রত্যাহার করছে।
পরিস্থিতির স্পর্শকাতরতার কথা বিবেচনা করে নাম না প্রকাশের শর্তে ওই সূত্রগুলো বলেছে, সিরিয়ার দুটি প্রধান ঘাঁটি থেকে সেনাদের সরাচ্ছে না রাশিয়া। এমন কিছু করার ইচ্ছাও বর্তমানে তাদের নেই।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছেন এমন একজন জ্যেষ্ঠ সিরীয় সেনা কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, কিছু কিছু সরঞ্জাম এবং আসাদের সামরিক বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মস্কোতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে। এই পর্যায়ে তাদের লক্ষ্য হলো স্থলভাগের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা এবং সে অনুযায়ী আবারও সংগঠিত হওয়া ও সেনা মোতায়েন করা।
সিরিয়ার নতুন গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠতা রয়েছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এমন একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির বিষয়টি এবং আসাদ সরকার ও মস্কোর মধ্যে অতীতে হওয়া চুক্তিগুলোকে আলোচনার আওতাভুক্ত রাখা হয়নি। তিনি বলেন, 'এটি ভবিষ্যৎ আলোচনার বিষয় এবং সিরিয়ার জনগণই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।'
নতুন সরকারের সাথে মস্কো যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম স্থাপন করেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।