ক্যান্সারের নতুন ভ্যাকসিন আবিষ্কার; ২০২৫ সালেই রোগীদের ওপর প্রয়োগ শুরু করবে রাশিয়া
![](https://tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/12/25/mn-cancer-vaccine-1734583730002.jpg)
ক্যান্সারের টিকা আবিষ্কারের কথা আগেই জানিয়েছিল রাশিয়া। সেক্ষেত্রে বহুল আকাঙ্ক্ষিত ভ্যাকসিনটি বেশ কয়েকটি গবেষণা কেন্দ্রের যৌথ সহযোগিতায় উন্নত করা হচ্ছে। দেশটির পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালেই এটি রোগীদের ব্যবহারের জন্য প্রয়োগ করা সম্ভব হবে।
ভ্যাকসিনটি সম্পর্কে গামলেয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডেমিওলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজির পরিচালক আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ জানান, আগামী বছরই হার্টসেন অনকোলজিকাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ও ব্লোখিন ক্যান্সার সেন্টারে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ শুরু হবে। তবে প্রথমদিকে এটি বেশ সীমিত পরিসরে রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে।
তিনি বার্তা সংস্থা তাসকে বলেন, "পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা গেছে, এই ভ্যাকসিন টিউমারের বিকাশ এবং সম্ভাব্য মেটাস্টেসগুলোকে দমন করে রাখে, ছড়াতে দেয় না।"
ভ্যাকসিনটি কোন ক্যানসারের চিকিৎসা করবে ও কতটা কার্যকর, এমনকি ভ্যাকসিনটিকে কী বলা হবে তা বর্তমানে স্পষ্ট নয়। অন্যান্য দেশগুলিও বর্তমানে ক্যান্সারের ভ্যাক্সিন তৈরিতে কাজ করছে।
নতুন ভ্যাক্সিনটির কার্যকারিতা প্রমাণে কয়েক ধাপে কাজ করছে রাশিয়া। ২০২২ সালের মধ্যবর্তী সময়ে গবেষকেরা অনেক কোভিড ভ্যাকসিনের অন্তর্নিহিত এমআরএনএ প্রযুক্তির দুর্দান্ত সাফল্য দেখতে পেয়ে নিজেরাও ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সেটি প্রয়োগে অগ্রসর হয়।
এমআরএনএ ভ্যাকসিন আমাদের কোষকে একটি প্রোটিন বা এমনকি একটি প্রোটিনের টুকরো তৈরি করার জন্য বার্তা দেয় যা ভাইরাসের মতোই দেখতে। প্রোটিন তখন আমাদের দেহের অভ্যন্তরে একটি প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি করে; যা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে।
এর আগে, তাস-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আলেকজান্ডার গিন্টসবার্গ বলেন, "কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের ব্যবহার একটি ব্যক্তিগত ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় কম্পিউটিং করতে এক ঘণ্টারও কম সময় লাগতে পারে।"
রাশিয়ার ভ্যাকসিন প্রধান আন্দ্রে কাপ্রিন বলেন, "এখন ব্যক্তিগত ভ্যাকসিন তৈরি করতে বেশ দীর্ঘ সময় লাগে; কারণ গাণিতিক ভাষায় একটি ভ্যাকসিন, বা কাস্টমাইজড এমআরএনএ কীভাবে ম্যাট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে তার কম্পিউটিং' করা হয়। আমরা ইভানিকভ ইনস্টিটিউটকে যুক্ত করেছি যা এটি করতে এআই'র (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) উপর নির্ভর করবে। মানে নিউরাল নেটওয়ার্ক কম্পিউটিংয়ের মাধ্যমে এই পদ্ধতিগুলো প্রায় আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা সময়ের মধ্যে করা সম্ভব হবে।"
২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র সরকার একটি জার্মান বায়োটেকনোলজি কোম্পানির সঙ্গে ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ ছাড়া ওষুধ কোম্পানি মডার্না এবং মার্ক অ্যান্ড কোম্পানি বর্তমানে ত্বকের ক্যানসারের ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। বাজারে ইতোমধ্যেই এমন ভ্যাকসিন রয়েছে যা ক্যানসার প্রতিরোধের কাজ করে, যেমন হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস-এর বিরুদ্ধে লড়াই করা ভ্যাকসিন, যা সার্ভিকাল ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে।