ইরানে উকুন আতঙ্ক: স্কুল বন্ধের গুজব!
ইরানে উকুনের প্রকোপ প্রায় নেই বললেই চলে। উকুনকে ইরানিরা বেশ ঘৃণা, ভয় ও আতঙ্কের চোখে দেখে। কিন্তু, সম্প্রতি স্কুলগুলোতে উকুনের উপদ্রব ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে। আর এ কারণে দেশটির স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হতে পারে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে।
ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ'র খবরে বলা হয়েছে, দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ও শারীরিক শিক্ষা সংক্রান্ত উপমন্ত্রী বলেছেন, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিভাগ দেশের বিভিন্ন এলাকায় উকুনের প্রকোপের ওপর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
দেশজুড়ে, বিশেষ করে মেয়েদের স্কুলে উকুনের প্রকোপ বেড়ে যাওয়া নিয়ে আইআরএনএ-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সামাজিক গোষ্ঠী সংক্রান্ত প্রতিবেদক সাদেক সাত্তারিফার্দ।
তিনি বলেছেন, ছাত্রাবাস ও আবাসিক বিদ্যালয়গুলো থেকে প্রতি বছর উকুনের প্রকোপের খবর পাওয়া যায়। কিন্তু প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, এ বছর উকুন পরিস্থিতি এখনও গুরুতর হয়ে ওঠেনি। উকুন নিয়ন্ত্রণের জন্য ছাত্রদের স্বাস্থ্য সচেতনতনার উন্নয়ন ঘটানো হচ্ছে। তাদের আচরণও নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আইআরএনএ'র খবরে আরও জানানো হয়েছে, কোনো কোনো আবাসিক বিদ্যালয়ে শ্যাম্পুসহ স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করা হয়েছে। চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও কোনো কোনো ক্ষেত্রে খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এসব পাঠানো হয়।
তেহরান থেকে প্রকাশিত দৈনিক হামশাহরি অনলাইন আইআরএনএ'র বরাত দিয়ে জানিয়েছে, উকুনের প্রকোপে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে কথাবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সামাজিক মাধ্যমের এমন সব কথাকে নিছক গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, উকুনের প্রকোপ কোনো সংক্রমণ নয়, কিংবা এটি কোনো ধরনের অসুখ-বিসুখও নয়। এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য এক ধরনের প্রকোপ। এ অবস্থায় স্কুল বন্ধ ঘোষণা করার প্রশ্নই আসে না।
এ খবরে আরও বলা হয়েছে, কয়েক দশক আগে স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত না থাকায় ইরানে উকুনের প্রকোপ দেখা দিলে মেয়েদের চুল ছেঁটে ছোট করে দেওয়ার এবং ছেলেদের মাথা বিশেষ যন্ত্র দিয়ে ন্যাড়া করে দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। হাল আমলে সে রেওয়াজ আর চর্চা করা হয় না। পরিবারে এবং স্কুলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মেনে চলার ওপর জোর দেওয়া হয়।