কানাডা 'এই হুমকির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে': ট্রাম্পের শুল্কারোপের জবাবে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়ার পর দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকা মার্ক কার্নি বলেছেন, তার দেশ "এই হুমকির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে"। খবর বিবিসি'র।
বিবিসি নিউজনাইটকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে ৫৯ বছর বয়সী কার্নি বলেন, কানাডা এর জবাব দিতে "ডলারের সমান ডলার ভিত্তিতে শুল্ক আরোপ করবে।"
শনিবার কানাডার আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের পাশাপাশি মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ এবং চীনের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে হোয়াইট হাউজ।
জানুয়ারিতে কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির নেতা হওয়ার দৌড়ে নামার ঘোষণা দেন কানাডা ও ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মার্ক কার্নি।
তিনি বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে থাকা পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে একজন। এখন পর্যন্ত লিবারেল এমপিদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেয়েছেন। আগামী ৯ মার্চ নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রতিযোগিতা শেষ হবে।
বিজয়ী ব্যক্তি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হবেন। ট্রুডো নয় বছর ক্ষমতায় থাকার পর জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় নেতা হিসেবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
কানাডাকে একটি নতুন সরকার নির্বাচিত করতে ২০ অক্টোবরের মধ্যে ফেডারেল নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে লিবারেল পার্টি তাদের কনজারভেটিভ প্রতিদ্বন্দ্বীদের থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
শুল্ক ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় কার্নি নিউজনাইটকে বলেন, "প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সম্ভবত ভাবছেন, কানাডা হাল ছেড়ে দেবে।"
তিনি বলেন, "কিন্তু আমরা এই হুমকির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে, আমরা পিছু হটবো না। আমরা একত্রিত এবং আমরা প্রতিশোধ নেব।"
সাবেক ব্যাংক অব ইংল্যান্ড গভর্নর বলেন, শুল্কগুলো "যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বব্যাপী সম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এগুলো উন্নতি থামিয়ে দেবে। মুদ্রাস্ফীতি বাড়িয়ে দেবে। সুদের হার বাড়িয়ে দেবে।"
তিনি যোগ করেন, "দশকেরও কম সময়ে দ্বিতীয়বারের মতো" যুক্তরাষ্ট্র "প্রকৃতপক্ষে তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তি ছিঁড়ে ফেলেছে"।
২০২০ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শেষের দিকে ইউএস-মেক্সিকো-কানাডা চুক্তি (ইউএসএমসিএ) কার্যকর হয়। এটি মূলত ১৯৯০ এর দশক থেকে তিনটি দেশের মধ্যে কার্যকর থাকা নাফটা চুক্তির হালনাগাদ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুনভাবে আরোপিত শুল্ক কানাডার অর্থনীতির ওপর তাৎক্ষণিকভাবে একটি বিধ্বংসী প্রভাব ফেলতে পারে এবং একই সাথে আমেরিকানদের জন্যও মূল্য বৃদ্ধি ঘটাতে পারে।
শুল্ক ট্রাম্পের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি এগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, চাকরি রক্ষা এবং কর রাজস্ব বৃদ্ধি করার একটি উপায় হিসেবে দেখেন।
কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, নতুন শুল্কের প্রতিক্রিয়া হিসেবে কানাডার জবাব "জোরালো" এবং "তাৎক্ষণিক" হবে।
শুক্রবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, কানাডার তেলের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এটি আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
তিনি আরও বলেছেন, তিনি ভবিষ্যতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক আরোপ করার পরিকল্পনা করছেন, কারণ ব্লকটি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভালো আচরণ করেনি।