মাত্র পাঁচ দিনের জ্বালানি মজুত আছে শ্রীলঙ্কায়
পাঁচ দিনের মতো জ্বালানি অবশিষ্ট আছে শ্রীলঙ্কায়, এরপরেই যাবে মজুত ফুরিয়ে। দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী বৃহস্পতিবার এ খবর জানিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানির জন্য প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লাইনের চালানের অপেক্ষায় আছে দ্বীপরাষ্ট্রটি।
২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশ শ্রীলঙ্কা গত সাত দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার মজুতে দেখা দিয়েছে চরম সংকট। সে কারণে জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধের মতো জরুরি পণ্য আমদানি করতে পারছে না শ্রীলঙ্কা।
জ্বালানি সংকট এতোটাই প্রকট হয়েছে যে, পেট্রোল স্টেশনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছেনা কিছুই। রাতভর অপেক্ষারত যানবাহন মালিকেরা ক্রমাগত বিক্ষোভে নামছেন, প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
মজুত থাকা অবশিষ্ট জ্বালানী যানবাহন, কয়েকটি ইন্ডাস্ট্রি এবং কিছু প্রয়োজনীয় পরিষেবার জন্য ব্যবহৃত হবে। এক মাস আগে অবশ্য শ্রীলঙ্কান প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাদের কাছে একদিনের জন্য পর্যাপ্ত পেট্রোল আছে।
শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা বলেছেন, সরবরাহকারীদের ৭২৫ মিলিয়ন ডলারের ওভারডিউ পেমেন্ট প্রদান করতে তারা অক্ষম। এছাড়া ভবিষ্যত চালানের জন্য লেটারস অব ক্রেডিট খুলতেও দেশটির সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির জন্য জ্বালানি সরবরাহ মেটাতে আমাদের প্রচুর ধুঁকতে হচ্ছে। সরকার ২১ জুন পর্যন্ত মজুত থাকা ডিজেল এবং পেট্রোলের ব্যবহার চালিয়ে নিতে কাজ করছে।"
"আমরা যদি অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ বন্ধ না করি এবং জ্বালানি মজুত করা না থামাই, তাহলে এ সংকট কাটিয়ে ওঠা আরও অনেক বেশি কঠিন হবে", বলেন তিনি।
"আমরা আগামী তিন দিনের মধ্যে পেট্রোলের একটি চালান এবং পরবর্তী আট দিনের মধ্যে আরও দুটি চালান পাওয়ার প্রত্যাশা করছি।"
ভারতের সরকারি এক্সিম ব্যাংক থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের নতুন একটি ক্রেডিট লাইনের জন্য অপেক্ষা করছে শ্রীলঙ্কা। এটি নিশ্চিত হলে আগামী কয়েক সপ্তাহের জ্বালানির চালানের অর্থায়নে ব্যবহার করা হবে বলে জানান কাঞ্চনা উইজেসেকেরা।
শ্রীলংকার আর্থিক সঙ্কটের সময় প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে পাশে থেকেছে প্রতিবেশী ভারত।
জ্বালানি আমদানির বিভিন্ন উপায় নিয়ে আলোচনা করতে ইতিমধ্যে রাশিয়াসহ একাধিক দেশের সাথে যোগাযোগ করেছে শ্রীলঙ্কা।
এছাড়াও সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে অর্থনৈতিক উদ্ধার পরিকল্পনা তথা একটি বেলআউট প্যাকেজের জন্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাথেও আলোচনা করছে তারা। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিদল আগামী ২০ জুন শ্রীলঙ্কায় আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
- সূত্র- সিএনএন