শ্রীলঙ্কায় আবারো জরুরি অবস্থা জারি
আজ সকালে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপে পালিয়ে যাওয়ার পর এবার দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
বিক্রমাসিংহের মিডিয়া সেক্রেটারি দিনুক কলম্বেজ রয়টার্সকে বলেন, "ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং পশ্চিম প্রদেশে কারফিউ জারি করেছেন,"
গোতাবায়া রাজাপাকসের অবিলম্বে পদত্যাগের দাবিতে বুধবার (১৩ জুলাই) সকালে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোর রাস্তায় নেমে আসে।
ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে টিয়ারশেল ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এদিকে, ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাতে চলমান বিক্ষোভের মধ্যেই দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়েছেন রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসে।
বিমান বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আজ (১৩ জুলাই) সকালে রাজাপাকসে, তার স্ত্রী এবং দুই দেহরক্ষী শ্রীলঙ্কার বিমান বাহিনীর একটি বিমানে চড়ে মালদ্বীপ চলে গেছেন।
এছাড়া, একটি সরকারি সূত্র ও রাজাপাকসের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি জানান, তিনি মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে আছেন।
শহরের প্রতিবাদস্থলের কেন্দ্রবিন্দু গালে ফেস গ্রিনে অবস্থানরত অনেকেই গোতাবায়ার দেশ ছেড়ে পালানো নিয়ে ক্ষুব্ধ।
এখানে গত ৪৩ দিন ধরে বিক্ষোভরত জিপি নিমাল সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেন, "আমরা চাই তারা এই দেশে থাকুক। আমরা আমাদের টাকা ফেরত চাই! আমরা সব রাজাপাকসেকে একটি উন্মুক্ত কারাগারে রাখতে চাই যেখানে তারা কৃষিকাজ করবে।"
"তাদের কোনো বিচার নেই," যোগ করেন তিনি।
এদিকে, কলম্বোতে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন বলেছে, ভারত শ্রীলঙ্কার জনগণকে সমর্থন করা অব্যাহত রাখবে।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার ক্ষমতাসীন দলের প্রধান সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে তাদের প্রেসিডেনশিয়াল নমিনি হিসেবে সমর্থন করতে আগ্রহী, যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
ক্ষমতাসীন দলের একটি শীর্ষ সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সদস্যরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসে ঐকমত্যে পৌঁছান যে, বিক্রমাসিংহই রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপাকসেকে প্রতিস্থাপনের যোগ্য।
এদিকে, বিক্ষোভকারীরা বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিও জানায়।
তবে একটি সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তৈরির সুযোগ দিতে নিজেই পদত্যাগের প্রস্থাব দিয়েছেন তিনি।
শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেওয়ার্দেনা রয়টার্সের পার্টনার এএনআইকে বলেন, তিনি এখনও রাজাপাকসের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন নি।
ক্ষমতাসীন দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ রাষ্ট্রপতি পদত্যাগের চিঠি পাঠাবেন।
গোতাবায়া পদত্যাগ করলে নিয়ম অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
তিনিও যদি পদত্যাগ করেন তাহলে সংবিধান অনুযায়ী, নতুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত দেশটির স্পিকার ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।