অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এরমধ্যেই দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে অস্বাভাবিক বলছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে এই মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
আজ শনিবার (৬ আগস্ট) বিকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে এই দাবি জানায় সংগঠনটি।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়িয়েছিল। তখন দাম নির্ধারণ করা হয় ৮০ টাকা লিটার। ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর- বাস ভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চ ভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ। তেলের দাম যে হারে বাড়ানো হয়েছে, তার চেয়ে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে অনেক বেশি।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যে দিশেহারা দেশের সাধারণ মানুষের চরম এক দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বাড়ানোর ফলে জনজীবনে চরম দূর্ভোগ নেমে আসবে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য, সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে। ইতোমধ্যে পরিবহন খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এতে শিল্প উৎপাদনও ব্যাহত হবে; ফলে আমদানি নির্ভরশীলতা বাড়বে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে অনেক ছোট ছোট শিল্প-কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। এতে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মধ্যে দিয়ে জাতীয় অর্থনীতি ওপর চাপ আরো বাড়বে।
তিনি বলেন, বেকারত্ব সমস্যাও আরো প্রকট হবে। আমাদের দেশে সাধারণত তেলের দাম যে পরিমাণ বাড়ে, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বাড়ে বাস ও অন্যান্য গণপরিবহনের ভাড়া। পণ্য পরিবহনের ভাড়াও ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দেয় ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিকরা। বাসের ক্ষেত্রে সরকার এবং বাসের মালিক-শ্রমিক নেতারা মিলেমিশে একচেটিয়াভাবে বাসের ভাড়া যে পরিমাণ বাড়ান- যাত্রীদের থেকে তার কয়েকগুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করা হয়। সরকার বাসের ভাড়া বাড়িয়ে দিলেও, সরকার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা অনুযায়ী বাসে আদায় হচ্ছে কিনা তার সঠিক তদারকি করা হয় না। বাড়তি ভাড়া আদায় বন্ধেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরো বলেন, বিশ্ববাজারে এক পর্যায়ে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালেও, বর্তমানে বাজার নিম্নমুখী। এই সময়ে বাজার পর্যবেক্ষণ না করে, কেবল আইএমএফ নির্দেশিত শর্ত বাস্তবায়নে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। অনতিবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে, পূর্বের মূল্য বহাল রাখার দাবি জানান তিনি।
প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনটির সহ-সভাপতি তাওহিদুল হক লিটন, যুগ্ম-মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল প্রমূখ।