প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার স্থিতিশীলতা চান, তাই ভারতের সাহায্য চেয়েছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর, তাই এ ব্যাপারে ভারতের সাহায্য চেয়েছেন তিনি।
জিরো টলারেন্স টু টেরোরিজম নীতির জন্য আসামের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানানোর কথা উল্লেখ করে ভারতে গিয়ে এ নিয়ে সাহায্য চান বলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
"আমি বলেছি, শেখ হাসিনা যদি সরকারে থাকেন, তাহলে স্থিতিশীলতা থাকে, আর স্থিতিশীলতা থাকলেই আমাদের উন্নয়নের মশাল থাকবে।
আসামের মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, "উনি (আসামের মুখ্যমন্ত্রী) বলেছেন বাংলাদেশ কেন টেরোরিস্টদের জন্য একটি হাব। এরপর বলেন আসাম, মেঘালয়ে এখন সন্ত্রাসী তৎপরতা না থাকায় উন্নয়ন হচ্ছে, অনেক হাসপাতাল অনেক কিছুতে বিনিয়োগ হয়েছে।
"তো এজন্য ভারত সরকারকে বলেছি, আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, শেখ হাসিনা থাকায় স্থিতিশীলতা এসেছে, স্থিতিশীলতায় দুই দেশেরই মঙ্গল হচ্ছে"।
"উনি (শেখ হাসিনা) আছেন বলেই আমাদের দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, উনি আছেন বলেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে", বলেন মোমেন।
আজ (১৯ আগস্ট) দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে বঙ্গবন্ধুর ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনে ফুল দেওয়া শেষে ভারতের কাছে সাহায্য চাওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ভারত সফরে তার বক্তব্যে কী বলেছিলেন তা নিয়ে আরও বলেন, "স্থিতিশীলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, রাজনৈতিক এবং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা অনেক দরকার, তাতে আপনার ও আমার দেশেরও মঙ্গল হবে। আমরা এই অত্র এলাকায় স্থিতিশীলতা চাই, কোনো ধরনের অস্থিরতা চাই না।"
"তারপর আমি বলেছি যে কিছু কিছু লোক সময় সময় অনেক উস্কানিমূলক কথা বলে।"
"আপনার আমার দেশেও দুষ্টু লোক আছে- তারা তিলকে তাল করে- আপনার সরকারেরও একটা দায়িত্ব হবে, এবং আমার সরকারেরও দায়িত্ব আছে- তিলকে তাল না করার সুযোগ সৃষ্টি যাতে না থাকে। আমরা যদি এটা করি- তাহলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকবে, আমাদের মধ্যে কোনো অস্থিতিশীলতা, অনিশ্চয়তা থাকবে না",
"আর আমি বলেছি, শেখ হাসিনা এবং আমরা বদ্ধপরিকর স্থিতিশীলতা থাকুক- এ ব্যাপারে আপনারা সাহায্য করলে খুশি হই।"
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেহেস্তে আছি মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে এমন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সে কথা বলেছিলেন তিনি।
"আমি বলেছি, আমরা খুব কষ্টে আছি। আমাদের জনগণ যথেষ্ট কষ্টে আছে। হঠাৎ করে সব দাম বেড়ে গেল। ডিমের দাম কোথায় ৯০ থেকে হয়ে গেল ১৫০। কোনোভাবেই এটা অঙ্কে মেলাতে পারি না।
"তবে, কেউ কেউ যখন বলছেন আমরা শ্রীলঙ্কা হয়ে যাচ্ছি, সে প্রেক্ষিতে বলেছি দ্রব্যমূল্য আমরা চাই কমাতে। এত বাড়বে কেন? ওখানে একটা কারসাজি আছে, এত বাড়ার কোনো কারণ নেই। কিছু লোক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পিছে লেগেছে।"
"আর আমি বলেছিলাম, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার কোনো কারণ নেই।অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক ভাল আছি।
কয়েকটি দেশের বর্তমান মূল্যস্ফীতির হারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "আমেরিকায় যেখানে বছরে ১-২% মূল্যস্ফীতি হয়, এবার ৯%। ইংল্যান্ডে ১-২% এর বেশি হয়না, সেখানে ১০%। তুরস্কের মতো বড় অর্থনীতি দেশ, সেখানে ৬০ এর উপরে। পাকিস্তানে ৩৭ % বাড়ছে। শ্রীলঙ্কায় নাকি ১৫০%+। সেদিক থেকে আমরা ৭%, আমরা তাদের থেকে অনেক ভাল আছি"।