বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হৃদয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত: দোরাইস্বামী
বাংলাদেশের বিদায়ী ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক হৃদয়ের মাধ্যমে সংযুক্ত।
গত দশকে দুই দেশ একসঙ্গে অনেক মহৎ কাজ করেছে যা উদযাপন করার মতোই। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে 'ট্রেন' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।'
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভারতীয় হাইকমিশনে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে দোরাইস্বামী বলেন, 'বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণ আত্মা ও হৃদয়ে সম্পর্কযুক এবং তা রক্তের সম্পর্কের চেয়েও বেশি কিছু। আমরা সব সময় সে সম্পর্ক বিশ্বাস করি।'
দোরাইস্বামী আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং।
ভারতীয় এই কূটনীতিক বলেন, তারা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের বিষয়ে অনেক কথাই বলেন কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, 'আমরা তোমাদের আত্মীয় এবং তোমরা আমাদের আত্মীয়।'
তিনি বলেন, একে অপরের কাছ থেকে প্রত্যাশা অনেক সময় অবাস্তব হতে পারে।
হাইকমিশনার বাংলাদেশে তার বন্ধুদের আর্জি জানান, তারা যেন সব সময় গ্লাসের দিকে তাকিয়ে তা 'অর্ধেক পূর্ণ' হিসেবে দেখে ইতিবাচকভাবে নেয়।
তিনি বলেন, 'অবশ্যই কিছু জিনিস আছে যা আমাদের একসঙ্গে করতে হবে, আরও অনেক কিছু আমরা করতে চাই এবং তা একসঙ্গে করা উচিত।'
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের অবদানের কথা স্বীকার করে রাষ্ট্রদূত বলেন, 'দুই দেশ একসঙ্গে যা করেছে তা উদযাপন করা এবং বাংলাদেশ-ভারত অংশীদারিত্বের সাফল্য উদযাপন করা আমাদের কাজ। আমরা প্রত্যেকেই আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে অবদান রেখেছি।'
দোরাইস্বামী বলেন, একজনের জীবনে অনেক ধরনের সম্মান থাকে। তবে বাংলাদেশের মতো একটি দেশে সেবা করা, যে দেশটি ভারতের কাছে তাৎপর্য ও গুরুত্বপূর্ণ দেশ, সে সম্মান দ্বিগুণ করেছে।
বাংলাদেশি বন্ধুদের বিদায় জানাতে হাইকমিশনার আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, ব্যবসায়ী নেতা, কূটনীতিক, সুশীল সমাজের সদস্য, শিল্পী ও জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার দোরাইস্বামী বাংলাদেশে তার মেয়াদ শেষ করে ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করতে পারেন। তিনি যুক্তরাজ্যে ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন এবং শিগগিরই তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শিগগিরই ঢাকায় আসছেন প্রণয় কুমার
বর্তমানে ভিয়েতনামে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা বাংলাদেশে ভারতের পরবর্তী হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
প্রণয় কুমার ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে এবং রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে পরিচয়পত্র জমা দেয়ার পরই আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
প্রণয় ১৯৯৪ সালে ভারতীয় ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন এবং হংকং, সান ফ্রান্সিসকো, বেইজিং, কাঠমান্ডু এবং ওয়াশিংটন ডিসিতে কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি ২০১৭ সালের জুন থেকে নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পূর্ব এশিয়া বিভাগের যুগ্ম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি কূটনৈতিক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে ভারতের পরমাণু শক্তি বিভাগে পরমাণু কূটনীতিক হিসেবেও কাজ করেন।
প্রণয় কুমারের মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি রয়েছে। ভারতীয় ফরেন সার্ভিসে যোগদানের আগে তিনি ভারতের ইস্পাত উৎপাদনকারী কোম্পানি টাটা স্টিলে তার পেশা জীবন শুরু করেছিলেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের মিডলবেরি ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে চীনা ভাষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে তার।