প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ‘আপত্তিকর’ পোস্ট, মহিলা দল নেত্রী গ্রেপ্তার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে রাজবাড়ীতে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ গ্রেপ্তার নারীর নাম সোনিয়া আক্তার ওরফে স্মৃতি৷ তিনি রাজবাড়ী ব্লাড ডোনার্সের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জেলা মহিলা দলের সদস্য৷ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন৷
টিবিএসকে তিনি বলেন, সোনিয়া আক্তারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৫৩ ও ৫০৫ ধারায় থানায় একটি মামলা রয়েছে, মঙ্গলবার রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গত সোমবার সন্ধ্যায় সামসুল আরেফিন চৌধুরী নামের স্থানীয় এক আওয়ামী লীগের নেতা ওই ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন৷ পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়৷ সোনিয়া আক্তার প্রায় এক মাস আগে ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়৷
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গত ৩১ আগস্ট সোনিয়া আক্তার তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস দেন৷ সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি বক্তব্যের সমালোচনা করে 'আপত্তিকর' কথা লেখেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে৷ অনেকে পোস্টটি দেখায় প্রধানমন্ত্রীর সুনাম ক্ষুণ্ণ ও মানহানি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন বাদী সামসুল আরেফিন চৌধুরী।
সামসুল আরেফিন চৌধুরী রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক৷ এদিকে সোনিয়া আক্তারকে মধ্যরাতে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকে।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেছেন, 'সোনিয়া আক্তারের দুটি ছোট বাচ্চা আছে৷ মধ্যরাতে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ এটা তো হানাদার বাহিনীর কর্মকাণ্ডের মতো৷'
এর বাইরে রাজবাড়ীর অনেক সাধারণ মানুষ তার গ্রেপ্তারের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, সোনিয়া আক্তার স্মৃতি গত ১৩ বছরে ২৭ হাজারের অধিক মুমূর্ষ রোগীকে বিনামূল্যে রক্ত সংগ্রহ করে দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫ ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে দিচ্ছেন বিভিন্ন জায়গায়।
মামলার বাদী সামসুল আরেফিন চৌধুরী টিবিএসকে বলেছেন, তিনি ফেসবুক পোস্ট দেখে মনে করেছেন তার বিরুদ্ধে মামলা করা উচিত। তবে কোন আইনের কোন ধারায় মামলা করেছেন সে বিষয়ে তিনি বলতে পারেননি। প্রথমে তিনি আইসিটি অ্যাক্টের কথা বলেন, আইসিটি অ্যাক্ট এখন আর বলবৎ নেই জানালে সামসুল বলেন, 'আমি আইন খুব একটা বুঝি না, তবে থানার ওসি স্যার আর আইনজীবি মিলে ধারা ঠিক করে দিয়েছেন। আইন বুঝে আমার এতো লাভ নেই। মামলা আরো দুইটা করবো। আর যারা আমাকে ফোন করে উল্টাপাল্টা কথা বলছেন, বাজে কথা বলছেন তাদের নম্বরও টুকে রাখতে বলেছেন ওসি স্যার। প্রয়োজন হলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেবো।'