মানবাধিকার ইস্যুকে ‘সস্তা রাজনৈতিক হাতিয়ার’ বানানো হিতে বিপরীত হতে পারে
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, মানবাধিকার ইস্যুকে 'সস্তা রাজনৈতিক হাতিয়ার' হিসেবে উপস্থাপন দেশের জন্য বৃহত্তর মঙ্গল বয়ে আনবে না। এই ধরনের প্রবণতা ভবিষ্যতে দেশকে সঠিকভাবে লক্ষ্য অর্জনে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী কিছু রাজনৈতিক দল, বিদেশি এনজিওকে কিছু স্থানীয়দের আপাত সমর্থনে দোষারোপ করেন। যারা মানবাধিকারের সমস্যাগুলোকে ভুলভাবে উপস্থাপনের জন্য এটিকে একটি সস্তা রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে নিচ্ছে।
মানবাধিকার বিষয়ক আলোচনায় বক্তব্যে আলম বলেন, "সরকারের ভালো উদ্দেশ্য আছে। অস্বীকার নেই, একেবারেই নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমরা ধীরে ধীরে উন্নতি করছি কি না।"
শনিবার বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড-বাংলাদেশ।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, অধ্যাপক আমেনা মহসিন ও অধ্যাপক সাদেকা হালিম প্রমুখ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপরাধবিরোধী এলিট ফোর্স র্যাব একটি সফল প্রতিষ্ঠান, যা জনগণের আস্থা অর্জন করেছে এবং এই বাহিনীকে নষ্ট করার উদ্দেশ্যে কোনো পদক্ষেপ সরকার নিতে পারে না।
দেশে যখন দেখা যাচ্ছে সন্তান বাবা-মাকে হত্যা করতে প্রস্তুত, তখন বাংলাদেশ কীভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এবং জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে সফলভাবে এই পর্যায়ে এসেছে তার বর্ণনাও দেন আলম। সেসব অর্জনকে খাটো করার কোনো সুযোগ নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তথ্যের ভিত্তিতে প্রমাণ থাকার জন্য মানবাধিকার রক্ষকদের নিজেদের লোকদের পরিচ্ছন্ন করার দায়িত্ব নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি সুশীল সমাজকে সম্পৃক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং উল্লেখ করেন যে, সরকার সেই দিকে নিযুক্ত রয়েছে।
আলম বলেন, মানুষ যাতে বিভ্রান্ত না হয় সেজন্য অধিকার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে সরকার, এনজিও, সাংবাদিক-সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
একটি দায়িত্বশীল মানবাধিকার সংস্থার গুরুত্ব তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, "আমি বলব বাংলাদেশ সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে স্মার্ট ৫০ বছর বয়সী দেশগুলোর মধ্যে একটি।"
মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবী জেড আই খান পান্না ১৯৭৫ সালকে এমন একটি সময় হিসেবে বর্ণনা করেন যখন জাতি মানবাধিকারের ওপর সবচেয়ে বড় আক্রমণ দেখেছিল। এ ঘটনার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ অভিজ্ঞতা ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
"প্রধান আক্রমণটি (মানবাধিকারের ওপর) হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। এবং ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মতো খারাপ কিছু হতে পারে না," বলেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাত্র ৪১ দিন পর, খন্দকার মোশতাক আহমেদ একটি এই অধ্যাদেশ জারি করেন। তিনি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরপরই দেশে সামরিক আইন জারি করে ক্ষমতা দখল করেন।
বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে জেড আই খান পান্না আরও বলেন, "কিছু ব্যর্থতা আছে। আমি বলবো এটি একটি এড়ানোর প্রবণতা, সীমাবদ্ধতা নয়।"
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তিটি কোনো তৃতীয় পক্ষ বা দেশের অংশগ্রহণ ছাড়াই সম্পাদিত সেরা চুক্তিগুলোর একটি।
এ অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতিত্ব দেন এই মানবাধিকার কর্মী।