নারায়ণগঞ্জে স্কুল ছাত্রী ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ১৭ বছর পর রায়, ৪ জনের ফাঁসি
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রীকে ধর্ষণের হত্যা মামলায় ১৭ বছর পর দেওয়া রায়ে ৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত।
একই মামলায় আরেক আসামি নাসরিন বেগমকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- কামরুল হাসান, রবিউল, শুক্কুর, আলী আকবর। যাবজ্জীবন প্রাপ্ত আসামী ডলি বেগম এবং খালাস পেয়েছেন নাসরিন বেগম।
তাদের মধ্যে রবিউল ও ডলি বেগম জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছে। বাকিরা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের সকলের বাড়ি ফতুল্লার বক্তাবলীর লক্ষীনগর পূর্বপাড়া এলাকায়।
ধর্ষণ ও হত্যার শিকার মুসলিমনগর কেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী আফসানা আক্তার নিপা (১১) ফতুল্লার চররাজাপুর এলাকার আকতার হোসেন ও নারগিছ বেগমের মেয়ে।
রায়ের পর নিহতের বাবা ও মামলার বাদী আক্তার হোসেন রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, "আমার নিষ্পাপ মেয়েকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টা চালিয়েছিল খুনিরা। দীর্ঘ দিন পর রায় হলেও আমরা সন্তুষ্ট। আদালতের রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।"
বাদীপক্ষের আইনজীবী মোঃ সাইদুল ইসলাম সুমন বলেন, ২০০৫ সালের ২ জুন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার চর রাজাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী আফসানা আক্তার নিপা তার ফুপুর বাড়ি লক্ষীনগর গ্রামে বড় বোনের সাথে দাওয়াত খেতে যায়। তারপর দিন সকাল থেকে সে নিখোঁজ ছিল। দুইদিন পর ৪ জুন লক্ষীনগর গ্রামের এক ক্ষেত থেকে নিপার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবা আক্তার হোসেন বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ফতুল্লা থানা পুলিশ প্রথমে ডলি বেগমকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন ডলি পুলিশকে জানায় নিপাকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। একই সঙ্গে ডলি আদালতে ১৬৪ ধারা জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকারীদের নাম পরিচয় জানায়।
তার দেওয়া জবানবন্দিতে আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আসামীরাও আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেয়।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রসিকিউশন শাওন শায়লা জানান, কামরুল, রবিউল, শুক্কুর আলী ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ প্রথমে ডলি আক্তারের বাসায় ও পরে নাসরিনের বাসায় নিয়ে যায়। দুজনে মিলে লাশটি আবার ক্ষেতে নিয়ে ফেলে আসে। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।