চট্টগ্রামে অর্গানিক উপায়ে পালিত ষাঁড় প্রদর্শন করলেন তরুণ খামারিরা
চট্টগ্রামে দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে ক্যাটল এক্সপো-২০২৩। নগরীর আউটার স্টেডিয়ামে শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে দিনব্যাপী চলে এই এক্সপো। কৃষি উদ্যোক্তা ও প্রাকৃতিক উপায়ে (অর্গানিক) পশুপালন প্রচারের উদ্দেশ্যে তরুণ খামারিরা তাদের অর্গানিকভাবে লালন-পালন করা ষাঁড়গুলো প্রদর্শন করে এক্সপোতে।
এতে চট্টগ্রামের ৩৮টি অ্যাগ্রো ফার্মে প্রাকৃতিকভাবে লালন-পালন করা ১০০টি ষাঁড় প্রদর্শন করা হয়। এক্সপোতে স্কুল ছাত্ররাসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষেরা ভিড় জমান।
নাহার অ্যাগ্রোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ রাকিবুর রহমান (টুটুল) দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "আমরা প্রতিবছর হাটে গিয়ে কোরবানির গরু কিনি। বছরের অন্যান্য সময়ও আমরা হাট থেকেই গরু কিনি। মোটাতাজা দেখলেই আমরা গরু কিনে ফেলি। কিন্তু কেউ একবারও জানতে চায় না যে, গরুটি রোগমুক্ত কি না, কীভাবে গরুটিকে এমন মোটাতাজা করা হয়েছে।"
"চট্টগ্রামে অনেক উদ্যোক্তা আছেন, যারা বৈজ্ঞানিকের বদলে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করছে। আমরা প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে সেসব বিষয় সবার সামনে আনতে চাই। এছাড়া, ভারত থেকে বেআইনিভাবে গরু বাংলাদেশে ঢোকে। আমরা সেটি বন্ধ করে পুষ্টিজাত মাংসজ খাদ্য যোগানে বাংলাদেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে চাই," যোগ করেন তিনি।
মেলায় অংশ নেওয়া এম এস বিসমিল্লাহ অ্যাগ্রোর কর্ণধার আরমান মুন্না বলেন, "গরু নিয়ে মেলায় অংশ নেওয়ায়, এর মাধ্যমে এক খামারির সঙ্গে অন্য খামারির এবং ক্রেতাদের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হচ্ছে। এটি আগামী কোরবানির বাজারসহ ক্রেতা-বিক্রেতাদের গরু ক্রয়-বিক্রয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।"
চট্টগ্রাম ক্যাটল ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বোরহানুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রদর্শনীতে শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তারা ষাঁড় লালন-পালন, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির পরিবর্তে কীভাবে প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যবহার করে ষাঁড়কে মোটাতাজা করা যায় সেসব বিষয়ে তাদের অর্জিত জ্ঞান তুলে ধরছে। মেলায় অংশ নেওয়া অ্যাগ্রো ফার্ম উদ্যোক্তাদের সবারই বয়স ৩৫ এর কোটায়।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এএসএম লুৎফুল আহসান, চ্যানেল আইয়ের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আবদুস সালাম, এসিআই এগ্রিবিজনেসের সভাপতি এফএইচ আনসারি দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের বিভিন্ন অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রাম ক্যাটল ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ইউনিট্রেড ইভেন্টস এই মেলার আয়োজন করে।
এছাড়া এসিআই ও রেনেটাসহ কয়েকটি অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান অংশ নেয় মেলায়।
গত বছর বিনামূল্যের প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হলেও এ বছর মেলায় প্রবেশ ফি রাখা হয় জনপ্রতি ৫০ টাকা।
মেলায় আসা রেয়াজুদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী আহমদ কবির বলেন, "গরুর মেলায় এসে খুবই ভালো লেগেছে। এখানে একটি মাঠে চট্টগ্রামের সব বড় বড় গরুগুলো হাজির করা হয়েছে। মনে হচ্ছে, এটি একটি বড় গরুর বাজার। পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটা-তাজাকরণের উপায়গুলো জানতে পারছি।"
"কোরবানির ঈদ, বিয়ে ও মেজবানসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে আমাদের গরু প্রয়োজন হয়। এখন থেকে এসব খামারি কাছ থেকে প্রয়োজনমতো গরু কেনা যাবে," যোগ করেন তিনি।