শহরে মোটরসাইকেলের গতিসীমা বৃদ্ধির প্রস্তাব পর্যালোচনার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
নগরে মোটরসাইকেলের গতিসীমা ৩০ কিলোমিটারের বেশি করার বিষয়টি পর্যালোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২১ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় গতিসীমার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হয়। সভায় অংশগ্রহণকারীরা বিষয়টি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে নিশ্চিত করেছেন।
সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত যাতায়াতের জন্য এবং পণ্য পরিবহনে মানুষ এখন প্রায়ই মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। তাই সামগ্রিক বিবেচনায় মোটরসাইকেলের গতিসীমা বাড়ানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন তিনি।
এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, তিনি এবিষয়ে ভালোভাবে অবগত নন, তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অবিলম্বে পালন করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ 'মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা ২০২৩' এর খসড়া তৈরি করেছে, এতে শহরের রাস্তায় মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।
মোটরসাইকেলের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ এবং চালকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে বেপরোয়া গতি ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্য রয়েছে এতে।
তবে এই প্রস্তাব জানাজানি হওয়ার পর বিভিন্ন মহলে সমালোচনা হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, ৩০ কিলোমিটার খুবই কম গতিসীমা, এর ফলে শহরের রাস্তায় যানজটও বাড়বে।
সাম্প্রতিক সময়ে, দেশে মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ে কিছু উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা ফাউন্ডেশনের তথ্যমতে, চার বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা বেড়েছে আড়াই গুণ।
২০২২ সালে ২,৯৭৩টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩,০৯১ জন নিহত হয়েছেন, যা ওই সময়ে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহতের ৪০.০৭ শতাংশ বলে বার্ষিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।
২০২২ সালে ৬,৮২৯টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়, চার বছর আগে যা ছিল ৪,৬৯৩টি। এসময় ১,১৮৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা কবলিত হয়েছিল।
সড়ক নিরাপত্তা ফাউন্ডেশনের মতে, চার চাকার যানের চেয়ে মোটরসাইকেল ৩০ গুণ বেশি বিপজ্জনক।
তবে দেশের বিভিন্ন শহরে যানজট ও বিকল্প পরিবহনে যাতায়াতের খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় অনেকের কাছেই পছন্দের বাহন হয়ে উঠেছে মোটরসাইকেল।
বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)-র মতে, চার বছর আগে মোটরসাইকেলের বার্ষিক বিক্রি ছিল ৫ লাখ ২৮ হাজার। আর ২০২২ সালে বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ।