দেশে নবজাতকের জন্মগত ত্রুটির হার ৭.০২%: গবেষণা
দেশে প্রতিবছর জন্মগত বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে জন্মায় ৭.০২ শতাংশ নবজাতক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নবজাতক বিভাগে ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে আসা ১১ হাজার ২৩২ জন শিশুর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
রোববার (২ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে বিশ্ব জন্মগত ক্রটি দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনার ও আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
গবেষণার তথ্য বলছে, গত ৮ বছরে বিএসএমএমইউয়ের নবজাতক বিভাগে শারীরিক বিভিন্ন ক্রটি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছে ৭৮৯টি শিশু। এই সংখ্যা গত ৮ বছরে চিকিৎসা নিতে আসা মোট শিশুর ৭.০২ শতাংশ, যা উন্নত বিশ্বে শিশুর জন্মগত ক্রটির হারের চেয়ে বেশি।
সেমিনারে জানানো হয়, পৃথিবীব্যাপী জন্মগত ক্রটির হার প্রতি ১০০ জনে ৩ থেকে ৬ জন, অর্থাৎ ৩ থেকে ৬ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য নবজাতকদের জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ এবং এর চিকিৎসার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন উন্নত চিকিৎসা সেবা ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে একের পর এক নিত্যনতুন ল্যাব প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে। জেনেটিক ল্যাবও প্রতিষ্ঠা করা হবে।
আলোচনা সভায় জন্মগত ক্রটির হার নির্ণয়, ত্রুটির কারণ, প্রতিরোধমূলক পরিকল্পনার ওপরেও আলোচনা করেন বক্তারা।
তারা জন্মগত ক্রটির ক্ষেত্রে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধের ওপর বেশি গুরুত্ব দেন। যেমন- গর্ভ পূর্ববর্তী এবং গর্ভকালীন সময়ে চেকআপ করা, গর্ভকালীন সময়ে (১৮-২২ সপ্তাহের মধ্যে) আল্ট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে জন্মগত ক্রটি নির্ধারণ করা, গর্ভকালীন অসংক্রামক ব্যাধি, যেমন- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, অল্প বয়সে এবং অধিক বয়সে গর্ভনিরোধ, আয়োডিনযুক্ত লবণের মতো খাবারের সঙ্গে ফলিক এসিড মেশানোর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জন্মগত ক্রটি প্রতিরোধ সম্ভব।
এছাড়া, গর্ভাবস্থায় জটিলতা চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিকিৎসকদেরকেও সতর্ক থাকা পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।