১২ জুলাই থেকে এক দফা আন্দোলনে বিএনপি
সরকার পতনে ১ দফা চূড়ান্ত আন্দোলনে প্রস্তুত বিএনপি। আগামী ১২ জুলাই সরকারবিরোধী একদফা আন্দোলনের চূড়ান্ত ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিএনপি। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় সমাবেশ থেকে এই ঘোষণা দেবে বিএনপি।
ওইদিন বেলা ২টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশে মাইক ব্যবহার ও সার্বিক নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল শনিবার বিএনপির দপ্তর থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের (ভার্চুয়ালি) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রায় এক ঘণ্টার রুদ্ধদ্বার সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অভিন্ন দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও জোট আলাদা মঞ্চ থেকে একই ঘোষণা দেবে।
সূত্র জানায়, ১২ জুলাইয়ের জমায়েতে ঢাকা মহানগর ছাড়া আশেপাশের নেতাকর্মীদেরও যোগ দিতে বলা হয়েছে। এক ঘণ্টার বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও জেলা ও অঙ্গসংগঠনের একজন শীর্ষ নেতা বক্তব্য রাখেন। বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের সভা শেষে রাতে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র জানায়, সমমনা জোট ও দলগুলোর কর্মসূচির প্রস্তাব নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। প্রস্তাবে হরতাল, অবরোধ, অসহযোগ ও ঘেরাওসহ লাগাতার নানা কর্মসূচির প্রস্তাব রয়েছে। তবে বিএনপি হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যেতে চায় না। অহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করতে চায়। পরিস্থিতি বাধ্য করলে কঠোর কর্মসূচিতে যাবে দলটি।
এদিকে গত শনিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একদফার আন্দোলনের সিদ্ধান্ত সহ সার্বিক পরিস্থিতি চেয়ারপারসনকে অবহিত করতেই মহাসচিব এ সাক্ষাৎ করেন বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
বিএনপির নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, ১৫ জুলাই একদফা ঘোষণার প্রস্তুতি ছিল দলটির। এ লক্ষ্যে সমমনাদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক করেন নেতারা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচন বিষয়ক ৬ সদস্যের তথ্যানুসন্ধানী মিশন ১৬ দিনের সফরে ঢাকা আসছেন। এদের মধ্যে দুজন শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছেছেন। বাকি ৪ জন আজ রোববার আসছেন। তাদের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়া এ সপ্তাহে ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী একটি প্রতিনিধি দল। তাই কিছুটা আগেই সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এই এক দফার আন্দোলনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিএনপি বিদেশি প্রতিনিধিদের কাছে বার্তা পৌঁছাতে চায় যে, তারা এই সরকার পতনের আন্দোলনে চূড়ান্ত ধাপে নেমেছে।
এদিকে আগামীকাল ১০ জুলাই সোমবার গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক আছে। ওই বৈঠকে সম্মিলিত বিরোধী দলের রাষ্ট্র মেরামতের 'যৌথ ঘোষণাপত্র' নিয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও আজ সিলেটে ও আগামী ১৭ জুলাই খুলনায় বিএনপির 'তারুণ্যের সমাবেশ' রয়েছে। ২২ জুলাই ঢাকায় সমাবেশ করবে ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল।