নতুন নিয়ম: একাধিক জন্মসনদ থাকলে, বাতিল করা যাবে ব্যক্তির সুবিধামত
একজন ব্যক্তির একাধিক জন্মসনদ থাকলে, তা বাতিলের ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম এনেছে স্থানীয় সরকার বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সুবিধামত যেকোন একটি জন্মসনদ রেখে বাকিগুলো বাতিল করতে পারবে।
এর আগে কোনো ব্যক্তির একাধিক জন্মনিবন্ধন থাকলে, প্রথমটি রেখে বাকিগুলো বাতিল করার নিয়ম ছিল যাতে পড়তে হত নানান জটিলতায়।
গত ৫ জুলাই নতুন নিয়মের বিষয়ে, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সনদ বাতিলের অনুমোদন প্রক্রিয়া উল্লেখ করে সারা দেশের সকল নিবন্ধন কার্যালয়, সকল সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সকল জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন সফটওয়্যার (বিডিআরআইএস)-এ অপ্রয়োজনীয় সনদ বাতিলের অপশন চালু করা হয়েছে। এই সুবিধার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি তার অব্যবহৃত ও অপ্রয়োজনীয় জন্মসনদগুলো বাতিল করে নিতে পারেন।
চিঠিতে বাতিলের চার ধাপের নিয়ম সম্পর্কে বলা হয়েছে, একাধিক সনদধারী ব্যক্তি তার বাতিলযোগ্য মূল সনদসহ তার সংশ্লিষ্ট নিবন্ধক কার্যালয়ে (যেখান হতে পূর্বে নিবন্ধনকরণ ও সনদ গ্রহণ করা হয়েছিল) হাজির হবেন।
কার্যালয়ের নিবন্ধক সহকারী দাখিলকৃত জন্মসনদগুলো অনলাইনে যাচাই করে তার আইডি হতে নির্ধারিত ফি গ্রহণান্তে অনলাইনে বাতিল আবেদন সম্পন্ন করবেন।
এরপর তিনি নিবন্ধক আবেদন গ্রহণ করে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অনলাইন সিস্টেমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের (রেজিস্ট্রার জেনারেল) নিকট প্রেরণ করবেন এবং দাখিলকৃত মূল জন্মসনদগুলো বিনষ্ট করবেন।
শেষ ধাপের রেজিস্ট্রার জেনারেলের আইডি হতে প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই শেষে আবেদনটির নিষ্পত্তি হবে।
তবে নতুন নিয়ম কার্যকর করার ২০ দিন পার হলেও, এখন পর্যন্ত একাধিক জন্মসনদ বাতিলের ক্ষেত্রে তেমন কোন সাড়া পাওয়ার যাচ্ছে না বলে জানা গেছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গা থেকে সার্ভার ডাউন থাকারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে রেজিস্ট্রার জেনারেল মোঃ রাশিদুল হাসান বলেন, "আগের নিয়মে অনলাইনে একাধিক জন্মনিবন্ধন থাকলে প্রথমটি রেখে বাকিগুলো বাতিল করা হত এতে অনেকে সমস্যায় পড়তেন। বিশেষ করে, যারা জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টে প্রথমটির পরিবর্তে পরবর্তী জন্মসনদের নম্বর ব্যবহার করতেন। এতে প্রথম জন্মসনদের সঙ্গে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের তথ্যের গড়মিল হয়ে যাচ্ছিল।"
"এর ফলে আমরাও বিপাকে পড়তাম, এই সমস্যা সমাধানেই নতুন এই নিয়ম চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে", তিনি যোগ করেন।
এখন একাধিক জন্মসনদধারী ব্যক্তি যে সনদটি তার জন্য প্রয়োজনীয় মনে করবেন, সেটি রেখে বাকিগুলো বাতিল করতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সাড়া না পাওয়ার বিষয়ে রাশিদুল হাসান বলেন, "আমরা চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু অনেকেই এই চিঠি এখনও পায়নি। আবার অনেকেই এখনও এই বিষয়টি অবগত নয়। এটি সবাইকে জানানোর ব্যবস্থা করা হবে।"
সার্ভার ডাউনের বিষয়ে তিনি বলেন, "সার্ভার ডাউন থাকার কোন ব্যাপার নেই। মাঝেমধ্যে কিছু সার্ভার ব্যবস্থাপনার কাজ করার সময় তথ্য নিরাপত্তার জন্য অল্প সময়ের জন্য সার্ভার বন্ধ করতে হয়। এছাড়া নতুন কোন সেবা যুক্ত করার সময় সার্ভার বন্ধ রাখতে হয়। এই যে আমরা নিবন্ধন বাতিলের নতুন নিয়ম করেছি। তার জন্যও নতুন গেটওয়ে করতে হয়েছে। এতে সার্ভার বন্ধ রাখতে হয়েছে। তবে সেটা খুবই অল্প সময়ের জন্য। সবসময় হয়তো কেউ চেষ্টা করে সার্ভার পান না।"
তিনি যোগ করেন, "আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কোন কোন এলাকায় সেবাগ্রহীতার দক্ষতার অভাব আছে। ভালভাবে না বোঝার কারণে ঠিকমতো করতে না পেরে সার্ভার ডাউনের অভিযোগ করেন। আবার অনেক নিবন্ধন কার্যালয়ে অনেক লোকজন এলে সার্ভার ডাউন বলে কাজ এড়ানোর চেষ্টা করে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।"