'আসামি' আনিসুজ্জামানের অজানা আখ্যান
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অসীম অজানা গন্তব্যে পাড়ি জমিয়েছেন বেশ কিছু দিন হলো। করোনার এই দুর্যোগকালে স্যারের চলে যাওয়া আলাদা বেদনাবিধুর আবহ তৈরি করেছে। বিশেষ করে স্যারকে শেষ শ্রদ্ধা না জানাতে পারার আক্ষেপ পোড়াচ্ছে অনেককেই। দেশের গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পরিসরে তার কীর্তি, অবদান, জীবন দর্শন, চিন্তা-চেতনার নানা দিক নিয়ে আলোচনা চলছে। দেশবরেণ্য এই শিক্ষাগুরুর অনেক সহকর্মী ও গুণমুগ্ধরা উল্লেখ করছেন, বাংলাদেশের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা একজন আনিসুজ্জামান মহাকাশে ধ্রুবতারার মতো জেগে আছেন। বাংলাদেশকে দেখাচ্ছেন প্রজ্ঞা, প্রগতি, সৃষ্টিশীলতা, সৃজনশীলতা ও অসাম্প্রদায়িকতার পথ।
একজন মানুষ সবার কাছে প্রিয় হবেন, তা সম্ভব নয়। আনিসুজ্জামানও হয়তো তা ছিলেন না। বিশেষ করে যেসব চিন্তক, একটিভিস্ট, রাজনৈতিক কর্মী, এমনকি যেসব শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলি বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার বিপরীত মেরুতে অবস্থান করেন, তারা আধ্যাপক আনিসুজ্জামানের শেষ বিদায়ে নিশ্চুপ থেকেছেন। তবে কেউ কেউ গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বর্তমান সরকারের সঙ্গে স্রোতে গা ভাসিয়েছেন, সরকারের আনুকূল্য নিয়েছেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কখনও এমন কিছু তিনি করেননি যাতে ক্ষমতাসীনরা বিব্রত বা বিরক্ত হয়।
এইসব অভিযোগের ব্যবচ্ছেদ বা তর্ক করা এই নিবন্ধের লক্ষ্য নয়। লক্ষ্য অন্য এক আনিসুজ্জামান সম্পর্কে কিছুটা জানা। একজন আনিসুজ্জামান সব সময় নিরাপদ দূরত্বে থেকেছেন, কখনই বৃহত্তর স্বার্থে কোনো ঝুঁকি নেননি। এমন অভিযোগ মোটেও সত্য নয়। ১৯৭১ সালে জীবন বিপন্ন করে তিনি মুজিবনগর সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। যা স্যারের জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অধ্যায়। এছাড়া ১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা গণ-আদালতে আনিসুজ্জামান স্যার অবিস্মরণীয় অবদান রাখেন। জামায়াতের তৎকালীন আমীর, মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত গোলাম আযমের বিচারের জন্য গঠিত এই আদালতে তিনি ছিলেন অন্যতম অভিযোগ উত্থাপনকারী। যে কারণে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে ফৌজদারী মামলার আসামি হতে হয়েছিল। গ্রেপ্তার এড়াতে রাতের অন্ধকারে যেতে হয়েছিল আত্মগোপনে।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আজন্ম বিরোধিতাকারী, মানবতাবিরোধী অপরাধী গোলাম আযম দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই পাক সেনাদের সহযোগিতায় পালিয়ে যান। এরপর লন্ডন ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ক্রমাগত বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা চালান বছরের পর বছর। ১৯৭৫ সালে পট-পরিবর্তনের পর ১৯৭৮ সালে অসুস্থ মা'কে দেখার অজুহাতে পাকিস্তানি পাসপোর্টে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঘাতক গোলাম আযম। এরপর অবৈধভাবে পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযম গোপনে ও প্রকাশ্যে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের গোপন সমঝোতা হয়েছিল। যার ভিত্তিতে ৬৮টি আসনে জামায়াতকে ছাড় দেয় বিএনপি। নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করেন বেগম খালেদা জিয়া। (আহমদ;২০১৬)
জিয়াউর রহমানের পর বেগম জিয়ার সরকারের আমলেও অনুকূল পরিবেশ পেয়ে আরও বড় পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামে জামায়াত। ১৯৯১ সালের ২৮ ডিসেম্বর দলটি ঘোষণা দেয়, গোলাম আযম জামায়াতে ইসলামীর আমির নির্বাচিত হয়েছেন। পাকিস্তানি নাগরিক, একাত্তরের কুখ্যাত ঘাতক, পাক বাহিনীর এই দোসরের রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক পুর্নবাসন নিয়ে সমাজে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। সর্বস্তরের মানুষ নিন্দা জানায়। সংসদের বিরোধী দল আওয়ামী লীগও এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। দলটি ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি সংসদ অধিবেশনে বাংলাদেশ থেকে গোলাম আযমের বহিষ্কারের দাবি করে। (আনিসুজ্জামান;২০১৫)
এদিকে গোলাম আযমের রাজনৈতিক পুনর্বাসনের প্রতিবাদে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ সুধীজন, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও আলোকিত পেশাজীবীগণ একত্রিত হওয়া শুরু করেন। কর্নেল কাজী নূরুজ্জামানের বাড়িতে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বৈঠকে যাত্রা শুরু করে 'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি'। শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে আহ্বায়ক করে ১০১ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। যে কমিটির সক্রিয় সদস্য ছিলেন আনিসুজ্জামান স্যার। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক। এরপর দ্রুত এই কমিটিতে যুক্ত হয় অন্তত ৭২টি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। যেগুলোর সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল আরও বড় পরিসরের প্ল্যাটফর্ম 'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল সমন্বয় কমিটি'। (মামুন;২০১৯)
'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল সমন্বয় কমিটি'র প্রধান লক্ষ্য ছিল জামায়াত আমির গোলাম আযমের প্রতীকী বিচার করা। এছাড়াও এই কমিটির আরও দুটি মূল লক্ষ্য ছিল গণ-তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশ ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে জনমত গঠন করা। বেশ কিছু বাধা অতিক্রম করে ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে বসে গণ-আদালত। লক্ষ্য- গোলাম আযমকে জনতার কাঠগড়াতে দাঁড় করানো। যে বিচারিক প্রক্রিয়াতে অভিযোগ উত্থাপন করেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি তার স্মৃতিকথাতে লিখেছেন:
'জাহানারা ইমাম আমার ছাত্রী ছিলেন। সেই দাবিতে তিনি বললেন, গণ-আদালতে গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আমাকেই অভিযোগ উত্থাপন করতে হবে। আমি তাকে বললাম, এতে আমার আপত্তি নেই, তবে যেহেতু ১৯৭১ সালে আমি দেশ ছেড়ে গিয়েছিলাম, তাই গোলাম আযমের তখনকার কার্যকলাপ সম্পর্কে আমার অভিযোগ হবে শোনা কথার সামিল। আমি বরঞ্চ ১৯৭২ সাল থেকে গোলাম আযম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যা যা করেছে, সে সম্পর্কে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ আনব। আর কেউ ১৯৭১ সালে তার ভূমিকা সম্পর্কে অভিযোগ করুক।' (আনিসুজ্জামান;২০১৫; ৪২৪)
উল্লেখ্য, আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হয়েছিল গণ-আদালতে তিনজন অভিযোগ উত্থাপন করবেন। বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গোলাম আযমের ভূমিকা সম্পর্কে অভিযোগ করবেন সৈয়দ শামসুল হক, ১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন ভূমিকা সম্পর্কে অভিযোগ করবেন বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীর ও স্বাধীনতা পরবর্তী ভূমিকা নিয়ে আধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিস্তর গবেষণা পর গোলাম আযমের বিরুদ্ধে আনিসুজ্জামান স্যার মোট ৬টি অভিযোগ তুলে ধরেন। অভিযোগগুলো ছিল:
- (১) ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হলে গোলাম আযম পাকিস্তানে বসে মাহমুদ আলী ও খাজা খয়েরউদ্দীনের মতো দেশদ্রোহীর সঙ্গে মিলিত হয়ে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি নামে একটি সংগঠনের সূচনা করেন এবং বিভিন্ন দেশে পূর্ব পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলন গড়ে তোলার আয়োজন করেন।
- (২) ১৯৭২ সালে গোলাম আযম লন্ডনে 'পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটি' গঠন করেন এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্র উচ্ছেদ করে আবার এই ভূখণ্ডকে পাকিস্তানের অংশে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করেন। ১৯৭৩ সালে ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস ইসলামিক সোসাইটিজের বার্ষিক সম্মেলনে এবং লেসটারে অনুষ্ঠিত ইউকে ইসলামিক কমিশনের বার্ষিক সভায় তিনি বাংলাদেশবিরোধী বক্তৃতা দেন। ১৯৭৪ সালে মাহমুদ আলীসহ কয়েকজন পাকিস্তানিকে নিয়ে তিনি পূর্ব লন্ডনে পূর্ব পাকিস্তান পুনরুদ্ধার কমিটির এক বৈঠক করেন। বাংলাদেশকে পাকিস্তানে পরিণত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে দেখে এই সভায় স্থির হয় যে, তারা এখন থেকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিয়ে একটি কনফেডারেশন গঠনের আন্দোলন করবেন।
- (৩) ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে গোলাম আযম রিয়াদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামি যুব সম্মেলনে যোগদান করেন এবং পূর্ব পাকিস্তান পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সকল মুসলিম রাষ্ট্রের সাহায্য প্রার্থনা করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত তিনি সাতবার সউদি বাদশাহ'র সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান এবং কখনো তিনি বাদশাহকে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে ও কখনো বাংলাদেশকে আর্থিক বা বৈষয়িক সাহায্য না দিতে অনুরোধ করেন।
- (৪) অনুরূপভাবে গোলাম আযম ১৯৭৩ সালে বেনগাজিতে অনুষ্ঠিত ইসলামি পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে আগত প্রতিনিধিদের কাছে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ার জন্য লবিং করেন। একই বছরে ত্রিপোলিতে অনুষ্ঠিত ইসলামি যুব সম্মেলনে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে হানিকর বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
- (৫) ১৯৭৩ সালে গোলাম আযম মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব আমেরিকা অ্যান্ড কানাডার বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানভুক্ত করার জন্য সবাইকে কাজ করতে আহ্বান জানান।
- (৬) ১৯৭৭ সালে গোলাম আযম ইসতামবুলে অনুষ্ঠিত ইসলামিক ফেডারেশন অব স্টুডেন্টস অরগানাইজেশনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশবিরোধী বক্তৃতা করেন। (সূত্র: বিপুলা পৃথিবী, পৃষ্ঠা: ৪৩০-৪৩১, অভিযোগগুলো সংক্ষিপ্তরূপে তুলে ধরা হলো)
অভিযোগ উত্থাপনের পর বিচারিক কার্যক্রম শেষে গোলাম আযমের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। প্রতীকী এই বিচার সারাদেশে বিপুল সাড়া ফেলে। আর বিষয়টিকে বেগম খালেদা জিয়ার সরকার তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে নেয়। প্রতীকী বিচারের কয়েকদিন পর (২৮ মার্চ) জাহানারা ইমামসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করে খালেদা জিয়ার সরকার। জারি করা হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। অভিযোগ আনা হয় দণ্ডবিধির মোট ৬টি ধারায়। যেগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি ধারা ছিল জামিন অযোগ্য। মামলা দায়ের পরপরই দ্রুততার সঙ্গে জারি করা হয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। যাতে পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজজ্জামান।
একজন সাংবাদিক মারফত মামলা ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার খবর পেয়েছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। খবর পেয়েই তিনি অন্যান্য আসামির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ব্যর্থ হন। কেউই বাড়িতে নেই। বুঝতে পারেন, সবাই আত্মগোপনে চলে গেছেন। এ সময় তিনি ফোনে কথা বলেন অ্যাডভোকেট মাহমুদুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ওই রাতে বাড়িতে না থাকার পরামর্শ দেন। একটা ব্যাগে সামান্য কাপড়, প্রয়োজনীয় কিছু ওষুধ ও জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে পড়েন অজানার উদ্দেশ্যে। অনেকটা ১৯৭১ সালের মতো অজানার পথে যাত্রা। সবশেষ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে আত্মগোপন করেন এক বন্ধুর বাড়িতে। পরদিন ওই বন্ধুর গাড়িতে করেই হাইকোর্টে যান। টানা দুই দিন শুনানি শেষে ৩০ মার্চ আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। তবে পরে তাদের নিম্ন আদালতে হাজির হয়েও জামিন নিতে হয়েছিল। উচ্চ আদালতের মতো নিম্ন আদালতেও ছিল নানা নাটকীয়তা।
এই মামলার কারণে পরবর্তীকালে আইনগত কার্যক্রমের পাশাপাশি নানা ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়। খালেদা জিয়া সরকারের পাঠানো একটি তালিকার ভিত্তিতে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে ভিসা বঞ্চিত করে কানাডা সরকার। এছাড়াও ছিল নানা ঝুট ঝামেলা। এরপর ১৯৯৬ সালে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের তত্ত্বাবধায়ক সরকার অধ্যাপক আনিসুজ্জামানসহ ২৪ জন বিশিষ্ট নাগরিকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন। বিচারপতি হাবিবুর রহমান তার শেষ কার্যদিবসে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। মামলামুক্ত হন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
১৯৯২ সালে 'ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি' গণ-তদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশসহ বেশ কিছু কর্মসূচী পালন করেছিল। কিন্তু এই শান্তিপূর্ণ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয় বেগম জিয়ার সরকার। এক মিছিলে লাঠিচার্জে আহত হয়েছিলেন জাহানারা ইমাম। তবে ওই আন্দোলন দেশের আপামর জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করতে পেরেছিল। যে অন্দোলনে শুরু থেকেই অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা ছিল অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের।
- লেখক: সহকারী অধ্যাপক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
সহায়ক সূত্রসমূহ:
১. আহমদ, মহিউদ্দিন (২০১৬), বিএনপি সময়-অসময় , ঢাকা: প্রথমা।
২. আনিসুজ্জামান (২০১৫), বিপুলা পৃথিবী, ঢাকা: প্রথমা।
৩. 'একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ২৬ বছর ও আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা'- মুনতাসির মামুন, (১৯ জানুয়ারি ২০১৮, বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডট কম, পুনরায় দেখা: ১৮ই মে ২০২০)