ব্রিটনি ও স্যামের বিচ্ছেদ: বিবাহপূর্ব চুক্তির বাইরেও বাড়তি অর্থ আদায়ের চেষ্টা করছেন স্যাম আসগরি?
বিয়ের এক বছরের মাথায়ই স্বামী স্যাম আসগরির সাথে বিবাহবিচ্ছেদ করতে যাচ্ছেন পপ তারকা ব্রিটনি স্পিয়ার্স। তবে বিবাহপূর্ব চুক্তি বা প্রিনাপ অনুযায়ী, সম্পত্তিবিষয়ক কিছু জটিলতায় পড়তে যাচ্ছেন এ জুটি।
ইয়াহু এন্টারটেইনমেন্টের সূত্র অনুযায়ী, বিবাহবিচ্ছেদের আইনি আনুষ্ঠানিকতায় তার প্রতিনিধিত্ব করার জন্য ডিভোর্স অ্যাটর্নি লরা ওয়াসারকে নিয়োগ করেছেন ব্রিটনি।
লরা বর্তমানে একটি বিতর্কিত বিবাহবিচ্ছেদ মামলায় কেভিন কোস্টনারের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এর আগে তিনি অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, কিম কারদাশিয়ান ও জনি ডেপের বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় তাদের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ইরানি বংশোদ্ভূত ২৯ বছর বয়সী মডেল ও পারসোনাল ট্রেইনার স্যাম আসগরি ৪১ বছর বয়সী ব্রিটনি স্পিয়ার্সের সাথে বিয়ের আগে গত বছর বিবাহপূর্ব চুক্তি বা প্রিনাপ স্বাক্ষর করেন। বিভিন্ন প্রতিবেদনে দাবি করা হচ্ছে, স্যাম সে চুক্তিটি সংশোধনের চেষ্টা করছেন।
২০২১ সালে ফোর্বসের অনুমান অনুযায়ী, ব্রিটনি স্পিয়ার্সের সম্পদের পরিমাণ ৬০ মিলিয়ন ডলার। ইউএস উইকলির প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের বিবাহপূর্ব চুক্তি অনুযায়ী, স্যাম আসগরি বিবাহবিচ্ছেদের পর 'প্রতি দুই বছরে ১ মিলিয়ন ডলার' করে পাবেন। ১৫ বছরে পাবেন ১০ মিলিয়ন ডলার।
কিন্তু তাদের বিয়ে ২০২২ সালের জুনে হওয়ায়, প্রিনাপ অনুযায়ী, ১ মিলিয়ন ডলার পাবেন না স্যাম।
এদিকে, পেজ সিক্সের কাছে একটি সূত্র দাবি করেছে, এ চুক্তির বাইরে গিয়ে অর্থ পরিশোধ নিয়ে আলোচনার চেষ্টা করছেন স্যাম। এমনকি, তাকে অর্থ না দেওয়া হলে ব্রিটনিকে নিয়ে বিব্রতকর তথ্য জনসমক্ষে প্রকাশ করার হুমকিও দিচ্ছেন তিনি। এছাড়া, তাদের বিবাহবিচ্ছেদ নিয়ে প্রথম প্রতিবেদন ছাপানো টিএমজি'র মতেও ব্রিটনির কাছে থেকে টাকা চান স্যাম।
তবে স্যাম আসগরির মুখপাত্র এসব দাবি অস্বীকার করেছেন। তাকে প্রতিনিধিত্বকারী ব্র্যান্ডন কোহেন ইয়াহুকে বলেন, 'এসব দাবি মিথ্যা। ব্রিটনির প্রতি কোনো নেতিবাচক ইন্টেনশন ছিল না এবং কখনই সেরকম কিছু করা হবেনা। স্যাম সর্বদা তাকে সমর্থন করেছে এবং সর্বদা তাকে সমর্থন করবে।'
এদিকে, এন্টারটেইনমেন্ট মাধ্যম এক্সট্রার প্রাপ্ত ডিভোর্স ডকুমেন্ট অনুযায়ী, ব্রিটনির কাছে আসগরি স্পাউজাল সাপোর্ট ও অ্যাটর্নি ফি চাইছেন।
বৃহস্পতিবার নিজের ইন্সটাগ্রাম প্রোফাইলে এক স্টোরিতে স্যাম লেখেন, 'পরস্পরের প্রতি ৬ বছরের ভালোবাসা এবং প্রতিশ্রুতির পর আমার স্ত্রী ও আমি আমাদের এ যাত্রা শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা একে অপরের প্রতি আমাদের ভালবাসা এবং সম্মান ধরে রাখব এবং আমি তার সর্বদা মঙ্গল কামনা করি।'
অন্যদিকে, ব্রিটনি স্পিয়ার্সের প্রতিনিধিরা এ বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। এমনকি বুধবার তাদের বিবাহবিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরও ব্রিটনির কোনো সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে স্যামের কথা উল্লেখ ছিল না।
টিএমজির সূত্রে জানা যায়, দিনকয়েক আগে ব্রিটনি ও স্যামের মধ্যে বড় রকমের ঝগড়া হয়, যেখানে আলোচিত এই গায়িকা স্যামের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন।
টিএমজির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সূত্র জানিয়েছে যে স্যাম এরই মধ্যে তাদের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছেন এবং বর্তমানে একা বসবাস করছেন। একটি সূত্রের ভাষ্যে, 'স্যামের বিচ্ছেদের আবেদন করা এখন সময়ের ব্যাপার।'
এসব সূত্র দাবি করেছে, গত কয়েক মাস ধরেই স্যাম ও ব্রিটনির মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল এবং তারা প্রতিনিয়ত ঝগড়া করতেন। তারা আরও বলে, স্যাম জনসমক্ষে ব্রিটনির খামখেয়ালি আচরণকে সমর্থন করলেও, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এ নিয়ে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন।
এদিকে পিপল ম্যগাজিন সূত্র বলছে, ব্রিটনির ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধব গত ফেব্রুয়ারি থেকেই এই তারকার শারীরিক-মানসিক অবস্থা নিয়ে 'উদ্বিগ্ন'। গত জুনের পর থেকে স্যাম ও ব্রিটনির একসঙ্গে কোনো ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়নি। এমনকি জুনে নিজেদের বিবাহবার্ষিকী নিয়েও তারা কিছুই লেখেননি।
২০১৬ সালে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের গান 'স্লাম্বার পার্টি'র মিউজিক ভিডিও শ্যুট করার সময় তার ও স্যাম আসগরির প্রথম দেখা হয়। এর কয়েক মাস পরই সম্পর্কে জড়ান তারা। ২০১৭ সালে তাদের সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আসে।
ব্রিটনির কনজারভেটরশিপের পুরো সময়টায় আসগরি তার সাথে ছিলেন, তাকে সমর্থন জুগিয়েছেন। ২০২১ সালে ব্রিটনিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি।