সর্বজনীন পেনশন: ‘প্রগতি’ স্কিমের গ্রাহক সবচেয়ে বেশি
সর্বজনীন পেনশনের চারটি স্কিমের মধ্যে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য প্রযোজ্য 'প্রগতি' স্কিমে সবচেয়ে বেশি মানুষ অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) উদ্বোধনের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত চারটি স্কিমে মোট ৬৪০০ জন অন্তর্ভূক্ত হয়ে চাঁদা পরিশোধ করেছেন, যারমধ্যে ৩৯% (২৫০০ জন) বেসরকারি চাকরিজীবী।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, প্রবাসীদের মধ্যেও সর্বজনীন পেনশন স্কিম ব্যাপক সাড়া ফেলছে। প্রায় ২০০০ প্রবাসী ইতোমধ্যে চাঁদা পরিশোধ করেছেন। অনেক প্রবাসীর ডুয়েল কারেন্সি (ডলার-টাকা) ইন্টারন্যাশনাল কার্ড না থাকায় তাদের সোনালী ব্যাংকের একাউন্টে চাঁদা দিতে পারছেন না।
এ সমস্যা সমাধান করতে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রোববার মিটিং করে নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা। প্রবাসীদের সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভূক্ত হতে যে ডুয়েল কারেন্সি কার্ড ব্যবহার করতে হবে, এ সম্পর্কে ওয়েবসাইটে ঘোষণা দিতে সোনালী ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন এমন একজন কর্মকর্তা টিবিএসকে বলেন, দেশি নাগরিকদেরও অন্য ব্যাংকের একাউন্ট থেকে সোনালী ব্যাংকে নিয়মিত চাঁদা পরিশোধের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা জানান, কোন বেসরকারি চাকরিজীবী বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তির যেসব ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে, সেসব একাউন্ট থেকে প্রতিমাসে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাঁদার অর্থ কেটে নিয়ে সোনালী ব্যাংকে করা ওই ব্যক্তির সর্বজনীন পেনশন অ্যাকাউন্টে জমা হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধান করতে সোনালী ব্যাংককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, সর্বজনীন পেনশনের অন্যতম প্রধান শর্ত হলো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নিয়মিত আয় থাকতে হবে। কিন্তু গৃহিনীদের আয় না থাকলেও তারা যেকোন স্বকর্মে নিয়োজিত থাকার তথ্য ব্যবহার করে সুরক্ষা স্কিমে অন্তর্ভূক্ত হতে পারছেন।
তবে অতি দরিদ্র হিসেবে 'সমতা' স্কিমে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার জন্য যারা নিবন্ধন করবেন, তাদের তথ্য যাচাই করে তবেই অন্তর্ভূক্ত করবে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ। এই স্কিমে অন্তর্ভূক্তদের চাঁদার অর্ধেক বা ৫০০ টাকা সরকার থেকে পরিশোধ করা হবে।
সরকারি অর্থের অপচয় রোধ করে যাতে প্রকৃত অতি দরিদ্ররা এ সুবিধা পান, সেজন্য আবেদনগুলো স্ক্রিনিং করা হবে।
অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অনেকেই upension.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করলেও চাঁদা পরিশোধ করছে না। যারা চাঁদা পরিশোধ করছেন, শুধুমাত্র তারাই সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভূক্ত হচ্ছেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পর ওইদিন মোট ১৭০০ নাগরিক সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। পরদিন শুক্রবার ৩০০০ এবং শনিবার ১৭০০ নাগরিক নিবন্ধন করে চাঁদা পরিশোধ করে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে জানতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিদিন দেশ-বিদেশ থেকে শত শত ফোন আসছে জানিয়ে একজন কর্মকর্তা জানান, রাত ৩টার সময়ও বিদেশ থেকে প্রবাসীরা ফোন করে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাচ্ছেন।
আগ্রহীদের সুবিধার জন্য অর্থ বিভাগ থেকে একটি হেল্প ডেস্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হেল্প ডেস্কে নিয়োজিত করার জন্য বেশকিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।