হামাসকে নির্মূল পরবর্তী গাজার ভবিষ্যৎ ‘নির্ধারণে’ আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল
![](https://tbsnews.net/bangla/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2023/10/21/1200x800.jpg)
হামাসকে নির্মূল করার করার পর গাজা উপত্যকার ভবিষ্যৎ কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন মার্কিন ও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা। গাজায় জাতিসংঘ সমর্থিত ও আরব সরকারগুলোকে যুক্ত করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও বসানোর সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা করছেন তারা।
এ আলোচনা অবশ্য এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সামনে ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে মোড় নেয়, তার ওপর নির্ভর করছে আলোচনার সিদ্ধান্ত। এছাড়া এরকম ঘটনা ঘটাতে হলে এ অঞ্চলের আরব দেশগুলোকে পক্ষে টানতে হবে—এবং এ কাজে সাফল্য পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা নেই।
ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বারবার বলেছেন, তাদের গাজা দখল করার ইচ্ছা নেই। তবে তারা একই সঙ্গে এ-ও বলেছেন যে ৭ অক্টোবরের হামলার পর গাজায় আর হামাসের শাসন অব্যাহত থাকাটা গ্রহণযোগ্য নয়।
স্থল আক্রমণ শেষ করার পর কী ঘটবে, তা নিয়ে ইসরায়েল যথাযথ চিন্তা করেনি বলে উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র। হামাসকে উৎখাত করার বাইরে আর কোনো স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে গাজায় আক্রমণ চালানোর ফলে আঞ্চলিক যুদ্ধ বেধে যেতে পারে বলেও যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের পর যুক্তরাষ্ট্র যে ভুল করেছিল, সেই একই ভুল ইসরায়েলও করতে পারে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এই মুহূর্তে তাদের মনোযোগ বিশ্বকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এক করা এবং গাজায় যত দ্রুত সম্ভব মানবিক সহায়তা পাঠানো। হামাসকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আখ্যা দিয়েছে।
স্থল আক্রমণের পর গাজার পরিণতি কী হবে, সেটিও মার্কিন কর্মকর্তাদের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। চলমান সংঘাতে বাইডেনের দল ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার পাশাপাশি গাজায় মানবিক সংকট দেখা দেওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এখন ইসরায়েলের আক্রমণের গতি ধীর করতে চাইছে, যাতে উত্তর গাজার মানুষ পালানোর সময় পায় এবং কাতারের মধ্যস্থতায় হামাসের সঙ্গে জিম্মিদের নিয়ে আলোচনার জন্যও সময় বের করতে পারে। শুক্রবার দুজন মার্কিন নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস।
সেন্ট্রাল ইনটেলিজেন্স এজেন্সির সাবেক সিনিয়র মধ্যপ্রাচ্য বিশ্লেষক উইলিয়াম আশার বলেন, গাজায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা ভীষণ কঠিন হবে। আরব সরকারগুলোর সমর্থন পাওয়া হবে আরও কঠিন।
শুক্রবার ইসরায়েলে প্রতিরক্ষামন্ত্রী দিয়েছেন, সামরিক অভিযান শেষ করার পর গাজা শাসন করার ইচ্ছা নেই দেশটির। ইসরায়েলের লক্ষ্য এ অঞ্চলে 'নতুন নিরাপত্তা বাস্তবতা' তৈরি করা।
ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের নির্বাচনে গাজায় হামাসের কাছে পরাজিত হয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
তবে মধ্যপ্রাচ্য বিশারদ টেড সিঙ্গারের মতে, বর্তমানে পশ্চিম তীর ও জর্ডান, লেবাননের মতো দেশগুলোতে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের শাসনকারী ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে গাজার নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়া টেকসই হবে না।
সিঙ্গার বলেন, ২০০৬ সালে গাজা থেকে উৎখাত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে।