আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে বিএনপির কোনো লাভ হবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে বিএনপির কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, 'বিএনপি সরকারের পতন ঘটাবে — নানারকম আন্দোলনের হুমকি দেয়। আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের হুমকি ও ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।'
প্রধানমন্ত্রী শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে দেশের প্রথম 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল' উদ্বোধন উপলক্ষে চট্টগ্রামের আনোয়ারার কেইপিজেড মাঠে আয়োজিত মহাসমাবেশে এ কথা বলেন। সমাবেশের আয়োজন করে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, 'একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই — জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আ. লীগ সরকার গঠন করে বাংলাদেশকে আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা এনে দিয়েছে। বরং খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে ভোট চুরি করেছিল বলেই বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলন করে তাদের ক্ষমতা থেকে হটিয়েছিল। এটা তাদের মনে রাখা উচিত।'
তিনি বলেন, 'ওরা ভোট চোর, জনগণের অর্থ চোর, বিএনপি-জামায়াত মানেই হচ্ছে খুনি, সন্ত্রাসি ও জঙ্গিবাদে বিশ্বাসী।'
সরকারপ্রধান বলেন, 'আওয়ামী লীগ শান্তি ও উন্নয়নে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী এগিয়ে যাচ্ছে। কেউ এই বাংলাদেশকে দাবিয়ে রাখতে পারবেনা, এটা হলো বাস্তবতা।'
'৭৫-এর বিয়োগান্তক অধ্যায় স্মরণ করে তিনি বলেন, বাবা-মা-ভাই সব হারিয়েছি। কিন্তু তাদের হত্যার বিচার চাওয়ার কোনো অধিকর আমার ছিল না। কারণ জিয়া ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে বিচারের পথকে রুদ্ধ করে রেখেছিল। খালেদা জিয়া ভোট চুরি করে ঐ খুনিদের ক্ষমতায় বসিয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, '১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্রগ্রামের ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে আমার ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। আপনাদের মনে আছে, ৩০ জন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী মারা গেছেন। এরপরও বারবার বাধা পেলেও নিজের জীবনের কোনো মায়া করিনি। একটা কথাই শুধু ভেবেছি, বাংলাদেশের মানুষ — যে মানুষের জন্য আমার বাবা সারাজীবন কষ্ট করেছেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন এবং জীবনটাও দিয়ে গেছেন — তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করব।
তিনি বলেন, 'আমার একটাই কাজ — দেশের মানুষের কল্যাণ করা। আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। শুধু আপনাদের দোয়া চাই।'
প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় পুনরায় ভোট প্রত্যাশা করে বলেন, 'আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছেন। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে কর্নফুলী টানেল, নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে উন্নয়ন। কাজেই আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনারা আমাদের আবারও সেবা করার সুযোগ দেবেন কি না, হাত তুলে ওয়াদা করুন।'
উপস্থিত নেতাকর্মীরা এসময় চিৎকার করে দুই হাত তুলে নৌকায় ভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে কর্ণফুলীর উত্তর তীরে পতেঙ্গায় 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল'-এর ফলক উন্মোচন করেন এবং নগরীর পতেঙ্গাকে আনোয়ারা উপজেলার সঙ্গে সংযোগকারী এই টানেলের ভেতর দিয়ে প্রথম যাত্রা করেন।
এরপর তিনি টানেল অতিক্রম করেন এবং নদীর দক্ষিণ তীরে আনোয়ারায় তার মোটরযানের টোল পরিশোধ করেন। পরে কেইপিজেড মাঠে সমাবেশে যোগ দেন।
১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সংযোগ সড়কসহ ৯.৩৯ কিলোমিটার দীর্ঘ টানেলটি সোমবার সকাল ৬টা থেকে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।