স্থানীয়ভাবে কুষ্ঠ রোগের ওষুধ উৎপাদন করুন: ওষুধ কোম্পানিগুলোকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ওষুধ উৎপাদন শুরু করতে দেশীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "আমি তাদের (আমাদের ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলোকে) কুষ্ঠ রোগীদের জন্য ওষুধ উৎপাদনের জন্য অনুরোধ করতে চাই, যাতে আমরা তাদের কম বা বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করতে পারি।"
রোববার (১২ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিতীয় জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলন-২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, "স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো সারা বিশ্বে ওষুধ রপ্তানি করে। আমরা খুব উচ্চ মানের ওষুধ উৎপাদন করি।"
প্রধানমন্ত্রী কুষ্ঠ রোগীদের স্পর্শ করা যাবে না এমন পুরনো ভুল ধারণা ও কুসংস্কার পরিহার করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, "আমাদের পুরানো বিশ্বাস এবং কুসংস্কার ত্যাগ করতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে এবং এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। "স্মার্ট বাংলাদেশে এ ধরনের কুসংস্কার লালন করে আমরা কীভাবে স্মার্ট হব?"
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুষ্ঠ রোগীরা ব্রিটিশ আমলের একটি আইন- কুষ্ঠ আইন, ১৮৯৮ এর কারণে সমাজ ও পরিবার থেকে বঞ্চিত ও বিচ্ছিন্ন ছিল। আইনটি তার সরকার বাতিল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী কুষ্ঠ রোগীদের পাশে দাঁড়াতে, তাদের মনোবল বাড়াতে, সহানুভূতি প্রদর্শন করতে এবং তাদের যথাযথ যত্ন নিশ্চিত করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে কুষ্ঠ নির্মূলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার লক্ষ্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুষ্ঠ রোগীরা উপজেলা হাসপাতাল থেকে বিনামূল্যে সেবা ও ওষুধ পাচ্ছেন।
তিনি বলেন, সরকার কুষ্ঠরোগ কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে যাতে নতুন রোগী শনাক্তকরণ এবং কুষ্ঠরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্প্রসারিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী কুষ্ঠ রোগ প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, "প্রতিরোধ আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এর কারণ ও প্রতিরোধে আমাদের বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে।"
বিশেষ করে জলবায়ু সংক্রান্ত রোগের কারণ ও বিশদ বিবরণ খুঁজে বের করার জন্য তিনি বিশেষজ্ঞদেরকে আরও বৃহত্তর উপায়ে চিকিৎসা গবেষণা চালাতে বলেন।
তিনি বলেন, "চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে আমাদের আরও গবেষণা প্রয়োজন। আমরা যদি এটি করি তবে আমরা আমাদের জলবায়ু সম্পর্কিত রোগগুলো সম্পর্কে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারব এবং সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে ও এই বিষয়ে ওষুধ তৈরি করতে সক্ষম হব।"
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কুষ্ঠরোগের জন্য জাতীয় কৌশলগত গাইডলাইন ২০২৩-২০৩০ উন্মোচন করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কুষ্ঠ রোগ নির্মূলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার শুভেচ্ছা দূত এবং জাপানে নিপ্পন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইয়োহেই সাসাকাওয়া।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম।
২০১৯ সালে জাতীয় কুষ্ঠ সম্মেলনের প্রথম সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়।