মিলারের সেঞ্চুরির পরও বড় হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ
অস্ট্রেলিয়ার দুই পেসার মিচেল স্টার্ক ও জশ হ্যাজেলউডের তোপে শুরুটা ভালো হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার। ৫০ পেরনোর আগেই হারাতে হয় দলের সেরা চার ব্যাটসম্যানকে। এরপর তোপ দাগলেন ট্রাভিস হেড, প্যাট কামিন্সরাও। বিপদে পড়া দলটিকে ছুটতে হলো দিগ্বিদিক। দুর্দশার মাঝেও লড়ে গেলেন ডেভিড মিলার, তুলে নিলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। কিন্তু তার একার লড়াইয়ে সংগ্রহ বড় হলো না দক্ষিণ আফ্রিকার।
বৃহস্পতিবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে আগে ব্যাটিং করা দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৯.৪ ওভারে ২১২ রানে অলআউট হয়ে গেছে। ছয়ে নেমে ১২ থেকে ৪৮ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করেন মিলার, তার ব্যাটেই মূলত ২০০ ছাড়ানো সংগ্রহ পায় প্রোটিয়ারা। এ ছাড়া হেনরিখ ক্লাসেন ৪০ ছাড়ানো ইনিংস খেলেছেন। বাকিদের কেউ-ই ২০ রানের গন্ডি পেরোতে পারেননি।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। স্টার্কের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে থামেন দলটির অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকা ধুঁকতে শুরু করে, স্টার্ক-হ্যাজেলউডদের সামনে রান তুলতে সংগ্রাম করতে থাকেন কুইন্টন ডি কক, রাসি ভ্যান ডার ডুসেনরা। ৫ ওভারে মাত্র ৮ রান জমা হয় প্রোটিয়াদের স্কোরকার্ডে।
ষষ্ঠ ওভারে গিয়ে আউট হন বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে থাকা ডি কক। হ্যাজেলউডের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাতে ধরা পড়েন এবারের বিশ্বকাপে চারটি সেঞ্চুরি করা বাঁহাতি এই প্রোটিয়া ওপেনার। কোণঠাসা হয়ে পড়া দলটি রানই তুলতে পারছিল না। ১০ ওভারে মাত্র ১৮ রান তোলে তারা। এর মধ্যে ১১তম ওভারে সাজঘরে ফিরতে হয় এইডেন মার্করামকে।
২২ রানে ৩ উইকোট হারানো দলটি গুছিয়ে ওঠার সুযোগ পায়নি, ১১তম ওভারে রাসি ভ্যান ডার ডুসেনকে ফিরিয়ে দেন হ্যাজেলউড। ২৪ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা তখন মাঝ দরিয়ায়। এখান থেকে দিকহারা দলের হাল ধরেন মিলার ও ক্লাসেন। বিপর্যয় কাটিয়ে জুটি গড়ে তোলা এই দুই ব্যাটসম্যান পঞ্চম উইকেটে ৯৫ রান যোগ করেন, তাদের ইনিংসে এটাই সবচেয়ে বড় জুটি।
ক্লাসেন ৪৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৭ রান করে বিদায় নেওয়ার পর মিলার একাই প্রায় শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যান। সপ্তম উইকেটে জেরাল্ড কোয়েটজার সঙ্গে ৫৩ রানের জুটি গড়েন ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ৪৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ১১৬ বলে ৮টি চার ও ৫টি ছক্কায় ১০১ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন মিলার। এটা বিশ্বকাপে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি, ওয়ানডের ষষ্ঠ।
মিলারকে অনেকটা সময় সঙ্গ দেওয়া কোয়েটজা ১৯ রান করেন। এ ছাড়া মার্করাম ১০ ও কাগিসো রাবাদা ১০ রান করেন। দলটির ছয়জন ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কের রান করতে ব্যর্থ হন। স্টার্ক ও কামিন্স ৩টি করে উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট পান হ্যাজেলউড ও ট্রাভিস হেড। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী স্টার্ক এই ম্যাচ দিয়ে নিজেকে আরেকটু এগিয়ে নিয়েছেন। ২৭ ম্যাচে তার উইকেট ৬২টি, যা বিশ্বকাপের তৃতীয় সর্বোচ্চ।